বাংলা শব্দ ভাণ্ডার : তৎসম শব্দ
তৎসম কথার অর্থ কী? তৎসম কথার অর্থ ‘তার সমান’। এখানে ‘তার’ বলতে সংস্কৃতের। আমরা জানি সংস্কৃত ভাষা থেকে বহু শব্দ বাংলা ভাষায় এসেছে। সংস্কৃত শব্দগুলি মোটামুটি তিন ভাবে বাংলায় প্রবেশ করেছে। ১: সরাসরি ও অবিকৃত ভাবে, ২: বিবর্তনের মাধ্যমে এবং ৩: সরাসরি, কিন্তু বিকৃত রূপে। এখন তাহলে আসুন জেনে নিই তৎসম শব্দ কাকে বলে। যে শব্দগুলি সংস্কৃত ভাষার শব্দভাণ্ডার থেকে সরাসরি ও অবিকৃত অবস্থায় বাংলা শব্দভাণ্ডারে প্রবেশ করেছে, তাদের বলে তৎসম শব্দ। তৎসম শব্দগুলি হুবহু সংস্কৃত শব্দের অনুরূপ, তাই এদের নাম তৎসম।
তৎসম শব্দ চেনার উপায়
তৎসম শব্দ চেনার একটি ভালো উপায় আছে। অবশ্য এই উপায়টি জানলেই সমস্ত তৎসম শব্দকে চেনা যাবে, এমন কোনো কথা নেই। যে কোনো শব্দকে চেনার জন্য আমাদের শব্দ ভাণ্ডারের সংগ্রহ বৃদ্ধি করতে হবে। তবে এই নিয়মগুলি জানলে বহু সংখ্যক তৎসম শব্দকে চেনা যাবে। নিয়মটি হলো: যে শব্দের প্রমিত বানানে ঋ বা ঋ-কার, ঈ বা ঈ-কার, ঊ বা ঊ-কার, ণ, ষ্, ক্ষ, ষ্ণ-এর মধ্যে যে কোনো একটি থাকবে, সেই শব্দটি অবশ্যই তৎসম শব্দ হবে। এই নিয়মটিকে সব জায়গায় কাজে লাগানোর জন্য বাংলা একাডেমির প্রমিত বানান সম্যক জানা দরকার। অবশ্য পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সঠিক উত্তর দেওয়ার জন্য বানান বিধি না জানলেও চলবে, কারণ প্রশ্নপত্রে সব সময় প্রমিত বানান বিধি অনুসরণ করা হয়।
তৎসম শব্দের উদাহরণ/তালিকা
সূর্য, চন্দ্র, জল, গৃহ, মৃত্তিকা, রাম, রাবণ, পুত্র, মাতা, পিতা, জননী, দেব, দেবী, দর্শন, বয়ন, গমন, রাত্রি, দিবা, সৌর্য, বীর্য, কৃতিত্ব, আদিত্য, নারায়ণ, বৃক্ষ, পশু, লতা, নর, নারী, বেদ, বেদান্ত, উপনিষদ, পুরাণ, ইতাহাস, ভূ, ভূমিকা, উচ্চ, নিম্ন, আদেশ, বর্জন, প্রত্যাঘাত, কর্ষণ, বর্ষণ, বৃষ্টি, কণা, বাণী, বীণা, রুদ্র, চণ্ডাল, কৃষক, বণিক, লৌহ, আকর, সমুদ্র, নদী, মেঘ, আলোক, অলক, মর্ত্য, স্বর্গ, লোভ, সাধু, ঋষি, পক্ষী, নীড়, নীর, দীর্ঘ, বাতায়ন, উদ্যান, রাজা, রাণী, রাজপুত্র, পন্থা, শুষ্ক, পুরস্কার, আদেশ, অনুরোধ, অনুবাদ, উদ্ধার, উন্নত, নত, মস্তক, হস্ত, পদ, উদর, জঠর, মুষ্ঠি, কপাল, ত্বক, জিহ্বা, নাসিকা, কর্ণ, চক্ষু, ভারতবর্ষ, রাষ্ট্র, রাজ্য, রাজধানী, এক, দশ, প্রভৃতি।
আরও পড়ুন