অপাদান কারক
যেখান থেকে কোনো কিছু বিচ্যুত, নির্গত, উৎপন্ন, প্রাপ্ত, আরম্ভ, পরিচালিত প্রভৃতি হয়, তাকে অপাদান কারক বলে। অপাদান কারক চেনার জন্য এর প্রতিটি শ্রেণিবিভাগ জেনে রাখা দরকার। তার পর নিচে আমরা অপাদান কারক চেনার উপায় আলোচনা করবো।
অপাদান কারকের শ্রেণিবিভাগ
১: স্থান-বাচক অপাদান: যে স্থান থেকে কর্তা বা কর্ম বিচ্যুত হয়, সেই স্থানকে স্থানবাচক অপাদান বলে।
যেমন: জলটা গ্লাস থেকে ঢালো। — গ্লাস অপাদান।
২: উৎস-বাচক অপাদান: যে উৎস থেকে কিছু পাওয়া যায় বা নির্গত হয়, তাকে উৎস বাচক অপাদান বলে।
যেমন: তিল থেকে তেল হয়।
৩: অবস্থান-বাচক অপাদান: যে স্থান থেকে দূরবর্তী ক্রিয়া পরিচালিত হয়, সেই স্থানকে অবস্থান বাচক অপাদান বলে।
যেমন: সে ছাদ থেকে ডাকছে।
৪: রূপান্তর-বাচক অপাদান: কোনো কিছু থেকে রূপান্তরিত হয়ে অন্য কোনো কিছুতে পরিণত হলে প্রথম পদটি অপাদান কারক হয়।
যেমন: দুধ থেকে দই হয়।
৫: দূরত্ব-বাচক অপাদান: এক স্থান থেকে অন্য স্থানের দূরত্ব বোঝানো হলে প্রথম স্থানটিকে দূরত্ব বাচক অপাদান বলে।
যেমন: কলকাতা থেকে দিল্লি অনেক দূরে।
৬: কাল-বাচক অপাদান: যে সময় থেকে কোনো কিছু শুরু হয়, সেই সময়কে কাল-বাচক অপাদান বলে।
যেমন: সকাল থেকে খেলা শুরু হবে।
৭: তারতম্য-বাচক অপাদান: দুইয়ের মধ্যে তুলনা বোঝালে চেয়ে/থেকে অনুসর্গ-বিশিষ্ট পদটিকে তারতম্য-বাচক বা তুলনা-বাচক অপাদান বলে।
যেমন: তোমার চেয়ে আমি বড়।
অপাদান কারক চেনার উপায়
অপাদান কারক চেনার সবচেয়ে সহজ উপায় হল অপাদান কারকের অনুসর্গ। অপাদান কারক অনুসর্গ-প্রধান কারক। যথার্থ বিভক্তিগুলি প্রায়ই তির্যক হয় বলে এদের সাহায্যে কারক চেনা যায় না। কিন্তু অনুসর্গ সাধারণত তির্যক হয় না। অপাদান কারকের হইতে, হতে, থেকে, চেয়ে, অপেক্ষা — এই অনুসর্গগুলি দেখে সহজেই অপাদান কারক চেনা যায়। কিন্তু অপাদান কারকে বিভক্তির প্রয়োগ হলে অপাদান কারককে চেনার জন্য অন্য একটি উপায় অবলম্বন করতে হয়। বিভক্তিটির বদলে থেকে/হইতে অনুসর্গ যোগ করে দেখতে হয়। যদি এই অনুসর্গগুলি বাক্যের মধ্যে খাপ খায়, অর্থ যদি বদলে না যায়, তাহলে অপাদান কারক হবে। যেমন: তিলে তেল হয় > তিল থেকে তেল হয়। রামায়ণে পড়েছি > রামায়ণ থেকে পড়েছি।
আশা করি বিষয়টি পরিষ্কার করতে পেরেছি। ইউটিউবে আমার ব্যাকরণের ক্লাস করার জন্য ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন আমার নাম অনন্য পাঠক (Ananya Pathak)।