আক্ষরিক অর্থ
‘আক্ষরিক‘ কথাটিকে ভাঙলে একটি শব্দ ও একটি প্রত্যয় পাবো: অক্ষর + ইক (ষ্ণিক)। প্রত্যয় অনুযায়ী কথাটির অর্থ হয়: অক্ষর বিষয়ক, অক্ষর অনুসারে, অক্ষর থেকে প্রাপ্ত ইত্যাদি। শব্দের অর্থ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। প্রতিটি শব্দের একটি প্রাথমিক সোজা অর্থ থাকে। আক্ষরিক অর্থ বলতে বোঝায় কোনো শব্দের মূল, প্রাথমিক অর্থ বা সবচেয়ে সরল অর্থটি। কিন্তু আমরা শব্দকে সব সময় তার মূল অর্থে ব্যবহার করি না। যেমন: যদি বলা হয়, “আজ না হোক কাল তুমি সাফল্য পাবেই।” তাহলে ‘আজ’ বলতে নিকট ভবিষ্যৎ ও ‘কাল’ বলতে ‘দূর ভবিষ্যৎ’ বোঝানো হচ্ছে। অথচ ‘আজ’ বলতে ‘অদ্য’ ও ‘কাল’ বলতে ‘কল্য’ বোঝায়। এই অদ্য ও কল্য হল ‘আজ’ ও ‘কাল’ শব্দের আক্ষরিক অর্থ। আক্ষরিক অর্থের অপর নাম আভিধানিক অর্থ। আভিধানিক = অভিধান + ইক (ষ্ণিক)। অভিধানে বা ডিকশনারিতে যে অর্থ দেওয়া থাকে, তাকে আভিধানিক অর্থ বলে। আক্ষরিক অর্থের বিপরীত ধারণা হল ব্যঞ্জনার্থ।
আক্ষরিক অর্থ ও ব্যঞ্জনার্থের কিছু উদাহরণ
উনি আমাদের গ্রামের মাথা। — মাথা শব্দের আক্ষরিক অর্থ শির বা মুণ্ড। এই বাক্যে ব্যঞ্জনার্থ প্রধান ব্যক্তি বা নেতা।
গোটা দেশে আগুন জ্বলছে। — আগুনের আক্ষরিক অর্থ হল অগ্নি। এই বাক্যে আগুন বলতে বোঝাচ্ছে অশান্তি।
আমার মায়ের হাতের রান্না একেবারে অমৃত। — অমৃত শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল সুধা। এই বাক্যে ব্যঞ্জনার্থ সুস্বাদু।