খ্রিস্টাব্দ ও বঙ্গাব্দ বা সাল
খ্রিস্টাব্দ ও বঙ্গাব্দের মধ্যে একটি জানা থাকলেই কি অপরটি নির্ণয় করা যাবে? এই প্রশ্নের উত্তর হলো, “যাবে, কিন্তু শুধুমাত্র সাল বা খ্রিস্টাব্দ জানলে হবে না। সেই সঙ্গে জানতে হবে বছরের কোন সময়ের কথা বা কোন মাসের কথা বলা হচ্ছে । নিচে খ্রিস্টাব্দ ও বঙ্গাব্দের সম্পর্কটি উদাহরণের সাহায্যে বোঝানো হলো।
খ্রিস্টাব্দ ও বঙ্গাব্দের সম্পর্ক
বঙ্গাব্দ ও খ্রিস্টাব্দের সম্পর্কটা গোটা বছর সমান যায় না। ১লা বৈশাখ থেকে মোটামুটি পৌষের মাঝামাঝি (অর্থাৎ ১লা জানুয়ারি) পর্যন্ত খ্রিস্টাব্দ থেকে ৫৯৩ বিয়োগ করলে বঙ্গাব্দ পাওয়া যাবে, বা বঙ্গাব্দের সঙ্গে ৫৯৩ যোগ করলে খ্রিস্টাব্দ পাওয়া যাবে। এরপর ১৫/১৬ই পৌষ থেকে চৈত্রের সংক্রান্তি পর্যন্ত (মোট সাড়ে তিন মাস) ৫৯৪ বিয়োগ করতে হবে, কারণ এই সময় ইংরেজি নতুন বছর এসে গেলেও বাংলা নতুন বছর আসে না। তাহলে দেখা যাচ্ছে বছরের মধ্যে সাড়ে আট মাস ফ্যাক্টর সংখ্যাটি হবে ৫৯৩ এবং বাকি সাড়ে তিন মাস এই সংখ্যা হবে ৫৯৪। এখন দুটো উদাহরণ নিয়ে দেখি: অগ্রহায়ণ ১৩৬৫, এই সালটিকে খ্রিস্টাব্দে প্রকাশ করতে হলে আমরা ৫৯৩ যোগ করবো। কারণ পৌষের মাঝামাঝি থেকে ৫৯৪এর হিসেব শুরু হবে। এবার ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে কত বঙ্গাব্দ ছিলো, তার হিসেব করার সময় ১৮৭৮ থেকে ৫৯৪ বিয়োগ করবো। কারণ ফেব্রুয়ারি মাস মানে ইংরেজি নতুন বছর এসে গেলেও বাংলা নতুন বছর আসেনি। অর্থাৎ এই সময়টা ওই সাড়ে তিন মাসের মধ্যে পড়ছে (জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিলের প্রথমার্ধ। আর বাংলায় বললে পৌষের দ্বিতীয়ার্ধ, মাঘ, ফাল্গুন ও চৈত্র)। এই সাড়ে তিন মাস ৫৯৪, বাকি পুরো সময়টা ৫৯৩ দিয়ে যোগ বিয়োগ করতে হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মাস না জানা থাকলে কী করবো? এর উত্তরে বলি, মাস না জানা থাকলে নিশ্চিত ভাবে হিসেব করা যাবে না। তখন ৫৯৩ দিয়েই যোগ বিয়োগ করা ভালো। তাতে ভুল হবার সম্ভাবনা কম থাকে, কারণ বছরের বেশিরভাগ সময় এই হিসেবটি থাকে।