গৌণ কর্ম ও মুখ্য কর্ম
গৌণ ও মুখ্য কর্ম সম্পর্কে আলোচনা করার আগে আমাদের জেনে নেওয়া উচিত কর্ম কাকে বলে। কর্ম সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকলে গৌণ কর্ম ও মুখ্য কর্ম বুঝতে অসুবিধা হবে।
কর্ম কাকে বলে
কর্ম হল ক্রিয়ার আশ্রয়। ক্রিয়ার কাজটি যার উপর প্রয়োগ করা হয়, তাকেই কর্ম বলে। যেমন: “বাঙালিরা ভাত খায়।” – এই বাক্যে খাওয়ার কাজটি ভাতের উপরেই প্রযুক্ত হচ্ছে। ভাতকেই তো খাওয়া হয়। সাধারণ ভাবে ক্রিয়াকে ‘কী’ বা ‘কাকে’ দিয়ে প্রশ্ন করলে উত্তরে কর্ম পাওয়া যায়। এ বার আসি মুখ্য ও গৌণ কর্ম প্রসঙ্গে। মুখ্য ও গৌণের ধারণাটি অনেকের কাছে স্পষ্ট নয়। আমি সেটিই স্পষ্ট করার চেষ্টা করবো।
গৌণ ও মুখ্য কর্ম
একটি ক্রিয়ার যদি দুটি কর্ম থাকে এবং তার মধ্যে একটি প্রাণীবাচক ও অপরটি জড়বাচক হয়, তাহলে জড়বাচক কর্মটি মুখ্য ও প্রাণীবাচক কর্মটি গৌণ হয়। এখন প্রশ্ন হবে প্রাণীবাচকটি গৌণ কেন? প্রাণী তো মুখ্য হওয়া উচিত। জড় পদার্থের চেয়ে প্রাণীর গুরুত্ব সবসময়ই বেশি। এখানে বুঝতে হবে, মুখ্যতা বা গৌণতা ভাবের বিচারে ঠিক করা হয় না। এখানে মুখ্যতা ও গৌণতা স্থির করা হয় ক্রিয়ার সাথে সম্পর্ক বিচার করে। ক্রিয়ার সাথে যার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, সে মুখ্য, যার সম্পর্ক পরোক্ষ, সে গৌণ। জড়বাচক কর্মটির উপর ক্রিয়ার কাজ সরাসরি প্রযুক্ত হয়। প্রাণীবাচক কর্মটির উপর পরোক্ষ ভাবে প্রযুক্ত হয়। “আমি তোমাকে টাকাটা দিলাম।” — এই বাক্যে দেওয়া কাজটি টাকার উপরেই সরাসরি কাজ করছে। টাকাটিরই হস্তান্তর ঘটছে। টাকারই বিচলন ঘটছে। যা হচ্ছে সবই টাকার উপর ঘটছে। তাই ‘তোমাকে’ কর্মটি গৌণ কর্ম।