বর্গীয় বর্ণ
বাংলা ব্যঞ্জনের উচ্চারণ স্থান অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগ করার সময় আমরা বলেছি যে, বর্ণমালার ক থেকে ম পর্যন্ত পঁচিশটি বর্ণকে বর্গীয় বর্ণ বলা হয়। আজকের আলোচনায় আমরা বিস্তারিত জানবো বর্গ কী, গণিতের বর্গের সঙ্গে ব্যাকরণের বর্গের সম্পর্ক, বর্গীয় বর্ণ কাকে বলে, কেন এদের বর্গীয় বলে এবং এদের অন্য আর কী পরিচয় আছে।
অঙ্কের বর্গ ও বর্গীয় বর্ণ
বাংলা ব্যাকরণ ছাড়াও ‘বর্গ’ কথাটি আমরা গণিত শাস্ত্রে পাই। কোনো সংখ্যাকে সেই সংখ্যা দিয়ে গুণ করলে যে গুণফল পাওয়া যায়, তাকে মূল সংখ্যার বর্গ বলে। যেমন: ৪ এর বর্গ ১৬ (বা ৪×৪=১৬)। আবার যে আয়তক্ষেত্রের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ সমান, তাকেও বর্গক্ষেত্র বলে। আসলে ব্যাকরণের বর্গের ধারণাটি গণিতের বর্গের ধারণা থেকেই এসেছে। নিচে ক থেকে ম পর্যন্ত বর্ণগুলির সজ্জা ভালো করে লক্ষ করুন, বর্ণগুলি বর্গাকারে সাজানো আছে। আড়াআড়ি ও লম্বালম্বিভাবে গুনলে দু দিক থেকেই ৫টি বর্ণ পাওয়া যাবে। এই কারণে এদের বর্গীয় ব্যঞ্জন বলা হয়।
বর্গীয় ব্যঞ্জনের অপর নাম কী?
বর্গীয় ব্যঞ্জনগুলির অপর নাম স্পর্শ ব্যঞ্জন। ক থেকে ম পর্যন্ত পঁচিশটি ব্যঞ্জনকে উচ্চারণ করার সময় বাগ্যন্ত্রের একটি উচ্চারক অঙ্গ একটি উচ্চারণ স্থানকে স্পর্শ করে। এই কারণে এদের স্পর্শ বা স্পৃষ্ট ব্যঞ্জন বলা হয় ।
বর্গের ভিতর বর্গ
বর্গের ভিতর আবার বর্গ আছে। অবশ্য এই বর্গের অর্থ হল ‘গোষ্ঠী’। যেমন ক থেকে ঙ পর্যন্ত পাঁচটি বর্ণকে বলা হয় ‘ক বর্গ’। অর্থাৎ এই পাঁচটি হল ক গোষ্ঠীর বর্ণ। একই ভাবে চ বর্গ, ট বর্গ, ত বর্গ ও প বর্গ নাম হয়েছে। প্রতিটি বর্গ আলাদা আলাদা স্থানে উচ্চারিত হয়। ক বর্গীয় ধ্বনির উচ্চারণ স্থান কণ্ঠ, চ বর্গীয় ধ্বনির উচ্চারণ স্থান তালু, ট বর্গীয় ধ্বনির উচ্চারণ স্থান মূর্ধা, ত বর্গীয় ধ্বনির উচ্চারণ স্থান দন্ত এবং প বর্গীয় ধ্বনির উচ্চারণ স্থান ওষ্ঠ।
ব্যঞ্জন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পড়ুন উচ্চারণ প্রকৃতি অনুসারে ব্যঞ্জনের শ্রেণিবিভাগ। ইউটিউবে আমার ভিডিও দেখে ব্যাকরণ বোঝার জন্য ইউটিউবে সার্চ করুন আমার নাম Ananya Pathak (অনন্য পাঠক)।