SLST ব্যাকরণ মক টেস্ট প্রথম পর্বের উত্তর ও ব্যাখ্যা
১: ‘সাংঘাতিক’ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ
গ) যুদ্ধ-সংক্রান্ত
ব্যাখ্যা: সংঘাত+ষ্ণিক = সাংঘাতিক। সংঘাত শব্দের অর্থ যুদ্ধ। ষ্ণিক প্রত্যয় যোগে গঠিত শব্দে ‘বিষয়ক, সংক্রান্ত, সম্পর্কিত ইত্যাদি বোঝায়। যেমন: মানব+ষ্ণিক = মানবিক = মানব-সংক্রান্ত।
২: “ডাল দিয়ে ভাত খাও।” “ভাত দিয়ে ডাল দাও।” এই দুই বাক্যের প্রেক্ষিতে কোন বিবৃতিটি সত্য?
গ) প্রথম বাক্যে ক্রিয়াপদ কর্মপ্রবচনীয়ে পরিণত হয়েছে।
‘দিয়ে’ পদটি গঠনগত দিক থেকে অসমাপিকা ক্রিয়া। প্রথম বাক্যে ‘দিয়ে’ পদটির দ্বারা কোনো কাজ করা বোঝাচ্ছে না। এখানে পদটি করণের অনুসর্গ রূপে কাজ করছে এবং এর অর্থ হচ্ছে ‘সহকারে’। অপর দিকে দ্বিতীয় বাক্যে ‘দিয়ে’ পদটির দ্বারা দেওয়া কাজ বোঝাচ্ছে। প্রথমে ভাত দেওয়ার কাজ ও তার পর ডাল দেওয়ার কাজ করতে বলা হচ্ছে। তাই এটি কর্মপ্রবচনীয় বা অনুসর্গে পরিণত হতে পারেনি।
৩: কোন বক্তব্যটি সঠিক?
খ) সংস্কৃত ভাষার প্রযোজক ধাতুগুলি প্রকৃত অর্থে ণিজন্ত ধাতু।
গ) বাংলা ভাষার প্রযোজক ধাতুগুলি নামে ণিজন্ত ধাতু হলেও প্রকৃত অর্থে ণিজন্ত ধাতু নয়।
ঘ) খ ও গ উভয়।
ব্যাখ্যা: ণিজন্ত কথার অর্থ হল ণিচ্ অন্তে যার। সন্ধিবিচ্ছেদ ণিচ্+অন্ত। এর অর্থ, যার শেষে ণিচ্ আছে। সংস্কৃত ভাষায় ণিজন্ত ধাতু গঠিত হয় ণিচ্ প্রত্যয় যোগে। যেমন √শিক্ষ+ণিচ্=√শিক্ষি। √শিক্ষ্ ধাতুর অর্থ হল শেখা, √শিক্ষি ধাতুর অর্থ হল শেখানো। সুতরাং দেখা যাচ্ছে সংস্কৃত ভাষায় প্রযোজক ধাতুগুলি প্রকৃত অর্থে ণিজন্ত ধাতু। অপরদিকে বাংলা ভাষার প্রযোজক ধাতু গঠিত হয় আ প্রত্যয় যোগে। কিন্তু সংস্কৃত ভাষার অনুসরণে বাংলা ব্যাকরণেও এদের ণিজন্ত ধাতু বলা হয়। বাংলা ভাষায় ণিচ্ প্রত্যয় নেই। তাই বাংলা প্রযোজক ধাতুকে নামে ণিজন্ত বলা হলেও আসলে ণিজন্ত নয়।
৪: বাংলা ভাষার প্রথম ব্যাকরণ গ্রন্থ কোথায় মুদ্রিত হয়েছিল?
ঘ) কোনোটিই নয়: ন্যাথানিয়াল ব্র্যাসি হ্যালহেডের A grammar of the Bengal language প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল পর্তুগালের লিসবন থেকে।
৫: কর্মবাচ্যে রূপান্তরিত করার জন্য মূল ক্রিয়াপদকে কোন পদের রূপ দিতে হয়?
খ) বিশেষণ পদ
ব্যাখ্যা: কর্মবাচ্যের ধাতু গঠিত হয় একটি বিশেষণ ও একটি ধাতুর যোগে। যেমন:
“তোমার দান আমি গ্রহণ করলাম> তোমার দান আমার দ্বারা গৃহীত হল।” এখানে কর্মবাচ্যে রূপান্তরিত করার জন্য ‘গ্রহণ করলাম’ ক্রিয়া থেকে একটি বিশেষণ পদ সৃষ্টি করা হয়েছে: গৃহীত। গৃহীত পদটিকে কয়েকটি বিশেষ্য পদের পূর্বে স্থাপিত করলেই বোঝা যাবে এটি একটি বিশেষণ পদ। যেমন: গৃহীত বস্তু, গৃহীত ঋণ ইত্যাদি।
৬: ষ্ণিক প্রত্যয় যোগে গঠিত শব্দগুলি সাধারণত যে পদ হয়:
খ) বিশেষণ পদ
ব্যাখ্যা: কয়েকটি উদাহরণ প্রয়োগ করে দেখলেই বোঝা যাবে ষ্ণিক প্রত্যয় যোগে গঠিত শব্দগুলি সাধারণত বিশেষণ পদ হয়। যেমন: মানসিক ব্যাধি, শারীরিক সুস্থতা, দৈহিক বল ইত্যাদি।
৭: উদ্দেশ্যের প্রসারক পদগুলি বাক্যের কোন গুচ্ছের অন্তর্গত হয়?
গ) বিশেষ্য গুচ্ছ
ব্যাখ্যা: উদ্দেশ্য যেহেতু বিশেষ্য গুচ্ছের প্রধান পদ রূপে কাজ করে, তাই উদ্দেশ্যের প্রসারকগুলিও বাক্যের মধ্যে উদ্দেশ্যকেই অনুসরণ করে এবং বিশেষ্য গুচ্ছের অন্তর্গত হয়।
৮: সম্বোধন পদ বাক্যের যে গুচ্ছের অন্তর্গত হয়, তা হল
ঘ) কোনোটিই নয়
ব্যাখ্যা: সম্বোধন পদের কাজ হল শ্রোতার মনোযোগ আকর্ষণ করা। তাই বাক্যের মূল গঠন বা Syntactic structure এর মধ্যে সম্বোধন পদ কোনো স্থান পায় না। এই কারণে সম্বোধন পদকে কমা চিহ্ন দ্বারা মূল বাক্য থেকে আলাদা করা হয়।
৯: বাংলা ব্যাকরণে ভাববাচ্যকে কতগুলি শ্রেণিতে বিভক্ত করা য়ায়?
গ) ৩
ব্যাখ্যা: সম্বন্ধ-কর্তা ভাববাচ্য, গৌণ-কর্মকর্তা ভাববাচ্য ও লুপ্ত কর্তা ভাববাচ্য। বিস্তারিত আলোচনা দেখতে বাচ্য অধ্যায়টি পড়ুন।
১০: “শচীনের খেলা সবাইকে মুগ্ধ করেছে।” এই বাক্যে কোন ধরনের সম্বন্ধ পদের ব্যবহার রয়েছে?
ক) কর্তৃ সম্বন্ধ ব্যাখ্যা: শচীন খেলা কাজের কর্তা। শচীনই খেলার কাজটি করছেন। সুতরাং ‘শচীনের খেলা’ বললে শচীনের সঙ্গে খেলার সম্বন্ধটি কর্তা সম্বন্ধ।
১১: “লোকটাকে মোক্ষম জবাব দেওয়া হয়েছে।” ‘মোক্ষম’ শব্দটি উৎসগত ভাবে
ঘ) বিদেশি (আরবি: মহ্কম)
১২: কোনটি পরাগত সমীভবন?
খ) দুগ্গা
ব্যাখ্যা: এই সমীভবনটিকে আমরা ধ্বনি-বিশ্লেষণ করে দেখি। দ্+উ+র্+গ্+আ > দ্+উ+গ্+গ্+আ ।
গ্ পরবর্তী ব্যঞ্জন। তার প্রভাবে পূর্ববর্তী ব্যঞ্জন র্ বদলে গিয়ে গ্ হয়েছে। সুতরাং এটি পরাগত সমীভবন। অন্য উদাহরণগুলি বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যাবে, ওগুলি পরাগত নয়।
১৩: ‘স্পুনারিজম’ পরিভাষাটি যে পরিভাষার সঙ্গে সম্পৃক্ত, তা হল:
গ) বিপর্যাস । এর অপর নাম দূরাগত বিপর্যাস।
১৪: মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষার নিদর্শন নয় কোন ভাষাটি?
ঘ) ব্রজবুলি: এটি ষোড়শ শতকের ভাষা। মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষার সময়কাল দশম শতাব্দী পর্যন্ত। সুতরাং এটি কোনো ভাবেই মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষা হতে পারে না।
১৫: স্বতোনাসিক্যীভবনের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় বাংলা ভাষার কোন উপভাষায়?
গ) ঝাড়খণ্ডি । যেমন: খেয়েছি> খাঁয়েছি, পেয়েছি>পাঁয়েছি, হয়েছে>হঁইচে ইত্যাদি।
১৬: “হে পিতৃব্য, তব বাক্যে ইচ্ছি মরিবারে।” চিহ্নিত পদদুটি যথাক্রমে
গ) সম্বোধন পদ ও করণ কারক।
১৭: “মানুষের বৃহদন্ত্র পরিপাক তন্ত্রের একটি অঙ্গ।” ‘বৃহদন্ত্র’ কোন সমাসের উদাহরণ?
খ) কর্মধারয় সমাস। বৃহৎ যে অন্ত্র। (সন্ধি: বৃহৎ+অন্ত্র)
১৮: সূর্যের সমার্থক শব্দ নয় কোনটি?
খ) দেবেশ। দেবেশ = শিব অথবা ইন্দ্র। দেবতাদের দেবতা, বা দেবতাদের শ্রেষ্ঠ।
১৯: “বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া।” প্রবাদটির নিকটতম অর্থ হল
খ) বাড়াবাড়ি করে শুরু করেও সামান্য কাজ করা।
বহু অর্থাৎ আড়ম্বরপূর্ণ আরম্ভে লঘু অর্থাৎ কম কাজ।
২০: কোন সন্ধিবিচ্ছেদটি ঠিক নয়?
ক) সহ্য+আদ্রি = সহ্যাদ্রি। সঠিক : সহ্য+অদ্রি। অদ্রি কথার অর্থ পর্বত।
উত্তরমালা
১: গ ২: গ ৩: ঘ ৪: ঘ ৫: খ ৬: খ ৭: গ ৮: ঘ ৯: গ ১০: ক ১১: ঘ ১২: খ ১৩: গ ১৪: ঘ ১৫: গ ১৬: গ ১৭: খ ১৮: খ ১৯: খ ২০: ক