মহাপ্রাণীভবন ও অল্পপ্রাণীভবনের ধারণা
ব্যঞ্জন ধ্বনির শ্রেণিবিভাগ থেকে আমরা জেনেছি যে প্রতি বর্গের দ্বিতীয় ও চতুর্থ ধ্বনি এবং হ ধ্বনি মহাপ্রাণ এবং অন্য সব ধ্বনি অল্পপ্রাণ। মহাপ্রাণ ধ্বনির উচ্চারণে বেশি পরিমাণে শ্বাসবায়ু নির্গত হয় এবং অল্পপ্রাণ ধ্বনির উচ্চারণে কম পরিমাণে শ্বাসবায়ু নির্গত হয়। ক, গ, ট, ড, ড় প্রভৃতি হল অল্পপ্রাণ ব্যঞ্জনের উদাহরণ এবং খ, ঘ, ঠ, ঢ, ঢ় প্রভৃতি হল মহাপ্রাণ ব্যঞ্জনের উদাহরণ। এই অল্পপ্রাণ ধ্বনি অনেক সময় মহাপ্রাণ ধ্বনিতে পরিণত হয় এবং মহাপ্রাণ ধ্বনিও অনেক সময় অল্পপ্রাণ ধ্বনিতে পরিণত হয়। এই ঘটনা দুটিকে যথাক্রমে মহাপ্রাণীভবন বা পীনায়ন এবং অল্পপ্রাণীভবন বা ক্ষীণায়ন বলে।
পীনায়ন ও ক্ষীণায়ন নামকরণের কারণ
পীন কথার অর্থ বড় বা স্থূল এবং ক্ষীণ কথার অর্থ ছোটো বা সূক্ষ্ম। আগেই বলেছি মহাপ্রাণ ধ্বনির উচ্চারণে বেশি শ্বাসবায়ু লাগে, তাই এই ধ্বনিগুলিকে পীন বা বড়ো হিসেবে ধরা হয় এবং বিপরীত দিকে অল্পপ্রাণ ধ্বনিকে ক্ষীণ হিসেবে ধরা হয়। ক্ষীণ থেকে পীন, তাই পীনায়ন ও পীন থেকে ক্ষীণ, তাই ক্ষীণায়ন… এইভাবে এই দুটি নামকরণ করা হয়েছে।
মহাপ্রাণীভবন কাকে বলে
কোনো অল্পপ্রাণ ধ্বনি যখন কোনো মহাপ্রাণ ধ্বনির প্রভাবে মহাপ্রাণ ধ্বনিতে পরিণত হয় তখন তাকে মহাপ্রাণীভবন বা পীনায়ন বলে।
মহাপ্রাণীভবনের উদাহরণ
মহাপ্রাণীভবনের কয়েকটি সুপরিচিত উদহারণ হল: স্তম্ভ > থাম, ব্যবহার > ব্যাভার, বিবাহ > বিভা
অল্পপ্রাণীভবন কাকে বলে
কোনো মহাপ্রাণ ধ্বনি যখন অল্পপ্রাণ ধ্বনি রূপে উচ্চারিত হয়, তখন তাকে বলা হয় অল্পপ্রাণীভবন বা ক্ষীণায়ন।
অল্পপ্রাণীভবনের উদাহরণ
বাঘ > বাগ, মাছ > মাচ, বলছি > বলচি, করছি > করচি, দুধ > দুদ, সুখ > সুক, ভুখ > ভোক, হাথ (মধ্য বাংলা) > হাত(আধুনিক বাংলা),