Ananyabangla.com

কারক ও বিভক্তি এবং অনুসর্গ: বিস্তারিত আলোচনা | কারক

কারক বিভক্তি

       এই অধ্যায়ে যা আছে

কারক কাকে বলে?

কারক কথার অর্থ ‘যে করে’। কিন্তু ব্যাকরণে কারকের অর্থ এর চেয়ে ব্যাপক‌। পাণিনি বলেছেন: “ক্রিয়ান্বয়ী কারকম্”। এর অর্থ হল, “ক্রিয়ার সঙ্গে যার সম্পর্ক আছে, সে-ই কারক।” আধুনিক বাংলা ব্যাকরণে কারকের এই ধারণাটির একটুখানি বদল ঘটেছে। (ক্রিয়া বলতে এখানে সমাপিকা ও অসমাপিকা, উভয় ক্রিয়াই বুঝতে হবে।) 

কারকের সংজ্ঞা – ক্রিয়াপদের সাথে বাক্যস্থ বিশেষ্যসর্বনাম পদের যে সম্পর্ক, তাকেেই কারক বলে। অর্থাৎ সম্পর্কিত পদটি নয়, সম্পর্কটি হল কারক। মনে রাখতে হবে, বিশেষ্য ও সর্বনাম পদ ছাড়া অন্য পদের কারক হয় না। 

এই অধ্যায়ে আমরা কারক, বিভক্তি, অনুসর্গ ও অকারক পদের বিস্তারিত পরিচয় নেবো। কারকের বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়ার আগে আমরা বিভক্তি ও অনুসর্গ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করে নেবো।

বিভক্তি ও অনুসর্গ

বিভক্তি কাকে বলে

বিভক্তি কথার অর্থ বিভাজন। যে ধ্বনি বা ধ্বনিগুচ্ছ শব্দ ও ধাতুর সাথে যুক্ত হয়ে শব্দ ও ধাতুকে পদে পরিণত করে, তাকে বিভক্তি বলে। বিভক্তি দুই প্রকার: ১: শব্দবিভক্তি ও ২: ধাতুবিভক্তি বা ক্রিয়াবিভক্তি। শব্দবিভক্তি শব্দকে নামপদে পরিণত করে এবং ধাতুবিভক্তি ধাতুকে ক্রিয়াপদে পরিণত করে। কারক অধ্যায়ে আমাদের শুধুমাত্র শব্দবিভক্তি সম্পর্কে জানতে হবে। 


মৌলিক শব্দবিভক্তি কোনগুলি

যে বিভক্তি অন্য কোনো বিভক্তি থেকে উৎপন্ন হয়নি, তাকে মৌলিক বিভক্তি বলে। বাংলায় পাঁচটি মৌলিক শব্দবিভক্তি আছে, যথা: কে, রে, র, এ, তে। এই পাঁচটি বিভক্তি থেকেই আর‌ও কয়েকটি বিভক্তি তৈরি হয়। যেমন: কে>একে, দিগকে, রে>এরে, র>এর, দের, লিগের, এ>য়, তে>এতে। বিভক্তি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।


অনুসর্গ কাকে বলে

যে অব্যয়পদগুলি পদের পরে আলাদা ভাবে ব’সে পদের সাথে পদের সম্পর্ক স্থাপন করে এবং অনেক সময় কারকের বিভক্তি রূপেও কাজ করে, তাদের অনুসর্গ বলে।

অনুসর্গগুলি একপ্রকার অব্যয় পদ। এদের পদান্বয়ী অব্যয় বলা হয়। অনুসর্গের অপর নাম কর্মপ্রবচনীয়, পরসর্গ বা সম্বন্ধীয়। কয়েকটি অনুসর্গ কারকের বিভক্তি রূপে কাজ করে। সব অনুসর্গ এই কাজ করে না। অপাদান, নিমিত্ত ও করণ কারকে অনুসর্গের বহুল ব্যবহার প্রচলিত আছে। অনুর্গের অপর নাম কর্মপ্রবচনীয় কেন, তা নিচে আলোচনা করা হল।

অনুসর্গের প্রকারভেদ: অনুসর্গ কত প্রকার

গঠন অনুসারে অনুসর্গ দুই প্রকার: নামজাত অনুসর্গ ও ক্রিয়াজাত অনুসর্গ। নামজাত অনুসর্গ কোনো না কোনো নামপদ থেকে নিষ্পন্ন হয়েছে। দ্বারা, জন্য, অপেক্ষা, কর্তৃক, নিমিত্ত প্রভৃতি অনুসর্গ নামজাত এবং দিয়ে, দিয়া, থেকে, হতে, হ‌ইতে, চেয়ে প্রভৃতি অনুসর্গ ক্রিয়াজাত। ক্রিয়াজাত অনুসর্গগুলি কোনো না কোনো ধাতু থেকে সৃষ্টি হয়েছে। গঠনের দিক দিয়ে ক্রিয়াজাত অনুসর্গগুলি আসলে অসমাপিকা ক্রিয়া, কিন্তু অব্যয়ের অর্থ প্রকাশ করে।


অনুসর্গকে কর্মপ্রবচনীয় বলে কেন?

অনুসর্গকে কর্মপ্রবচনীয় বলে কেন, এই প্রশ্নের বহু ভুল উত্তর বাজারে চালু আছে। যার যা ইচ্ছা গেছে লিখে দিয়েছে। এবার সঠিক উত্তরটি জেনে নিন:  ‘কর্মপ্রবচনীয়’ কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন পাণিনি। পাণিনির ১|৪|৮৩ সূত্রে কর্মপ্রবচনীয়ের ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। কর্মপ্রবচনীয় শব্দে কর্ম বলতে তিনি ক্রিয়া বুঝিয়েছেন। পাণিনি অনুসারে কর্মপ্রবচনীয় কথাটির অর্থ হল, যে পদগুলি অতীতে কোনো ক্রিয়ার অর্থ প্রকাশ করত (অর্থাৎ অতীতে ক্রিয়াপদ রূপে গণ্য হত) কিন্তু  বর্তমানে কোনো ক্রিয়ার অর্থ প্রকাশ করে না, কেবল ক্রিয়ানিরূপিত সম্বন্ধ প্রকাশ করে। তাই ক্রিয়াজাত অনুসর্গগুলিই প্রকৃতপক্ষে  কর্মপ্রবচনীয়। এগুলি মূলে অসমাপিকা ক্রিয়া হলেও বর্তমানে ক্রিয়া নয়, ক্রিয়ার সাথে নামপদের সম্পর্ক প্রকাশ করে। সুতরাং আমরা এই সংজ্ঞা থেকে এও বুঝতে পারছি যে, নামজাত অনুসর্গকে আক্ষরিক অর্থে কর্মপ্রবচনীয় বলার কোনো কারণ নেই। শুধুমাত্র ক্রিয়াজাত অনুসর্গগুলিকেই এই নামে অভিহিত করা যুক্তিপূর্ণ। 



বিভক্তি ও অনুসর্গের পার্থক্য

১: বিভক্তি ও অনুসর্গের প্রধান পার্থক্য হল: অনুসর্গের স্বাধীন অর্থ ও স্বাধীন ব্যবহার আছে, বিভক্তির স্বাধীন অর্থ ও স্বাধীন ব্যবহার নেই।


২: বিভক্তি পদের সঙ্গে যুক্ত অবস্থায় থাকে। অনুসর্গ পদের পরে আলাদা ভাবে বসে।

৩: বিভক্তি কোনো পদ নয়। অনুসর্গ নিজে এক ধরনের অব্যয় পদ।

৪: বিভক্তি শব্দ ও ধাতু, উভয়ের সাথে যুক্ত হতে পারে। অনুসর্গ শুধুমাত্র পদের পরে বসে, ধাতুর পরে বসে না।


কারক কত প্রকার?

কারক ছয় প্রকার: কর্তৃ কারক, কর্ম কারক, করণ কারক, নিমিত্ত কারক, অপাদান কারক, অধিকরণ কারক। অতীতে সংস্কৃত ব্যাকরণের সম্প্রদান কারক বাংলা ব্যাকরণে অন্তর্ভুক্ত ছিলো। বর্তমানে এই কারকটি বাদ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে নিচে আলোচনা করেছি। ছয় প্রকার কারক ছাড়াও বাংলা ব্যাকরণে দুটি অকারক পদ রয়েছে: সম্বন্ধ পদ ও সম্বোধন পদ। নিচে এদের সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে। আলোচনা পড়ার আগে এই ভিডিওটি দেখলে বুঝতে সুবিধা হবে। ইউটিউবে আমার অন্যান্য ভিডিওগুলো দেখার জন্য ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন আমার নাম অনন্য পাঠক (Ananya Pathak)



বাংলা ব্যাকরণে সম্প্রদান কারক বিতর্ক

সংস্কৃত ভাষার ব্যাকরণে প্রচলিত সম্প্রদান কারক বাংলা ব্যাকরণ থেকে বর্জিত হয়েছে। ভাষাচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় এবং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্প্রদান কারককে ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছেন বহুদিন আগেই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে সম্প্রদান কারককে গৌণ কর্ম ছাড়া অন্য কিছু বলার কোনো যুক্তি নেই। দান ক্রিয়ার মাহাত্ম্য বোঝানোর জন্য‌ই এই কারকটিকে আলাদা করা হয়েছিলো। দান করা যত‌ই মহৎ কাজ হোক, তাতে ক্রিয়ার সঙ্গে কারক পদের সম্পর্কটি বদলে যায় না। সংস্কৃত ব্যাকরণের নিয়মে স্বত্ব ত্যাগ করে দান করলেই দান-গ্রহীতা সম্প্রদান রূপে গণ্য হয়, স্বত্ব ত্যাগ না করলে কর্ম হয়। এখানেই সম্প্রদান কারকের অন্তঃসারশূন্যতা (অন্তত বাংলায়) ধরা পড়ে। স্বত্ব ত্যাগ করে ভিখারিকে ভিক্ষা দেওয়া হয়, অথচ ধোপাকে কাপড় দেওয়া হয় স্বত্ব ত্যাগ না করে। ক্রিয়ার সম্পাদনের কথা ভাবলে এই দুটি কাজে কোনো ফারাক নেই। তাই ভিখারির কর্ম কারক হতে বাধা নেই। অকারণে একটি বাড়তি কারকের বোঝা আমরা ব‌ইবো কেন? সংস্কৃতে সম্প্রদানে চতুর্থী বিভক্তি হয়। বাংলায় তথাকথিত সম্প্রদান কারকে কর্ম কারকের বিভক্তিই ব্যবহার করা হয়। রবীন্দ্রনাথ ও সুনীতিকুমারের পরামর্শ অনেক পরে হলেও ফলপ্রসূ হয়েছে। তবু সম্প্রদান ও নিমিত্ত কারক বিষয়ে এখনও কিছু বিভ্রান্তি রয়ে গেছে। যথাস্থানে এই বিভ্রান্তি নিয়ে আলোচনা করা হবে। এই প্রসঙ্গে একটি কথা বলে রাখি: বাংলা ব্যাকরণের আর এক দিক্‌পাল পণ্ডিত ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সম্প্রদান কারককে বাদ দেওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন না। আমি এই বিষয়ে তাঁর লেখাটি পড়েছি। সুনীতিকুমার ও রবীন্দ্রনাথের যুক্তির কাছে শহীদুল্লাহর যুক্তি এই ক্ষেত্রে ধোপে টেকে না। আপনারা তাঁর লেখা ‘বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত’ পড়ে দেখতে পারেন।


অনুসর্গপ্রধান কারক ও বিভক্তিপ্রধান কারক

বাংলা কারকগুলিকে অনুসর্গপ্রধান ও বিভক্তিপ্রধান, এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এমনিতে বাংলা কারকে বিভক্তি ও অনুসর্গ ব্যবহারের বাঁধাধরা কোনো নিয়ম নেই। অনুসর্গের জায়গায় বিভক্তি ও বিভক্তির জায়গায় অনুসর্গ ব্যবহার করা যায়। তবুও করণ, নিমিত্ত ও অপাদান কারকে অনুসর্গের বহুল ব্যবহার দেখা যায় বলে এদের অনুসর্গপ্রধান কারক বলে এবং কর্তৃ, কর্ম ও অধিকরণ কারকে বিভক্তির প্রয়োগ বেশি হয় বলে এই তিনটিকে বিভক্তিপ্রধান কারক বলে।

এবার আমরা কারকের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা করবো।

কর্তৃ কারক

বাক্যের ক্রিয়ার কাজটি যে সম্পন্ন করে, তাকে কর্তা বলে। কর্তার কারক কর্তৃ কারক।

কর্তা নির্ণয়ের সময় সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। অনেক সময়ই আমরা জড় বস্তুকে কর্তা বলে ভাবতে পারি না। এই মানসিক থেকে বেরিয়ে আসতে হবে‌। বাক্যের কর্তা জড়বস্তু হতেই পারে ‌। যেমন: সূর্য উদিত হল, বাতাস ব‌ইছে, বন্যায় গ্রাম ভাসিয়ে দিয়েছে, কাশফুল ফুটেছে, এই বাক্যগুলিতে জড়বস্তু কর্তা রূপে আছে।
 


কর্তৃকারকের প্রকারভেদ


১: উক্ত কর্তা : 

কর্তৃবাচ্যের কর্তাকে উক্ত কর্তা বলে। এই কর্তা ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। অর্থাৎ এই কর্তার পুরুষের উপর সমাপিকা ক্রিয়ার রূপের পরিবর্তন হয়। উক্ত কর্তার ব্যবহার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।

যেমন: ছেলেরা ফুটবল খেলছে। 
পাখিরা গান গাইছে। মাঝি নৌকা চালায়। আমরা স্কুলে যাই।

২: অনুক্ত কর্তা – কাকে বলে

কর্মবাচ্য ও ভাববাচ্যের কর্তাকে অনুক্ত কর্তা বলে। এই দুই বাচ্যে প্রকৃত কর্তাটি বাক্যের উদ্দেশ্য হতে পারে না। তাই আপাতদৃষ্টিতে তাকে কর্তা বলে মনে হয় না। এই কারণেই এদের অনুক্ত বলা হয়। অনুক্ত মানে যা বলা হয়নি‌। কর্মবাচ্য ও ভাববাচ্যে প্রকৃত কর্তাকে কর্তার স্থানে রাখা হয় না। তবে তাতে কারক বদলে যায় না। 

যেমন: রাম কর্তৃক রাবণ নিহত হন। আমাদের দ্বারা আপনি সম্বর্ধিত হবেন। তোমাকে যেতেই হবে। আমার খাওয়া হয়়েছে।
 এই প্রসঙ্গে পড়ে নিন অনুক্ত কর্ম কাকে বলে

অনুক্ত কর্তা ও ঊহ্য কর্তা কি এক?

অনুক্ত কর্তা ও ঊহ্য কর্তা এক নয়। অনেকেই এই দুটি গুলিয়ে ফেলেন। ঊহ্য কর্তাকে বাক্যের মধ্যে দেখা যাবে না, কর্তা ঊহ্য থাকবে। যেমন: “বাড়ি ফিরে পড়তে বসবো।”- এই বাক্যের কর্তা ‘আমি’ ঊহ্য আছে। এটিই ঊহ্য কর্তা। অপর দিকে অনুক্ত কর্তা বাক্যে উপস্থিত থাকবে, কিন্তু বাক্যের মধ্যে কর্তার প্রাধান্য থাকবে না।

৩: প্রযোজক কর্তা ও প্রযোজ্য কর্তা – কাকে বলে

যে কর্তা  অন্যকে দিয়ে  কাজ করায় সে হলো প্রযোজক কর্তা । প্রযোজক কর্তা থাকলে প্রযোজক ধাতুও থাকতে হবে। এই বিষয়টি বুঝে নেওয়ার জন্য ধাতু  অধ্যায়টি দেখে প্রযোজক ধাতু সম্পর্কে ধারণা গড়ে নিতে হবে। প্রযোজক কর্তা যাকে কাজ করায়, সে প্রযোজ্য কর্তা।

প্রযোজক ও প্রযোজ্য কর্তার উদাহরণ: নিম্নরেখ কর্তাগুলি প্রযোজক এবং ইটালিক হরফের কর্তাগুলি প্রযোজ্য।

আমি তোমাকে কথাটা বলাবো।  তুমি গানটা আমাকে শোনাও। মাস্টারমশাই আমাদের পড়াচ্ছেন। তুমি ছেলেটাকে কাঁদাচ্ছো কেন? বাবা ছেলেকে গাড়ি থেকে নামালেন। জোকার সবাইকে হাসায়। সঞ্জয় আমাকে ছবিটা দেখাবে। মা শিশুকে খাওয়ায়। বাবু মালীকে কাজ করাচ্ছেন। ড্রাইভার আমাকে ড্রাইভিং শেখাচ্ছে। আমি খবরটা তোমাকে জানাবো। 

প্রযোজক কর্তা ক্রিয়ার কাজটি নিজে করে না, অন্যকে করায়‌। যেমন: “আমি খবরটা তোমাকে জানাবো” এই উদাহরণে ক্রিয়ার কাজ হল ‘জানানো’। জানা আর জানানো এক কাজ নয়‌। জানা মানে নিজে জানা আর জানানো মানে অন্যকে জানানো। মনে রাখতে হবে, যে করায় সে প্রযোজক আর যে করে সে প্রযোজ্য। প্রযোজ্য ও প্রযোজক কর্তার মধ্যে যে কোনো একটি বা কখন‌ও দুটিই ঊহ্য থাকতে পারে ‌।

৪: ব্যতিহার কর্তা – কাকে বলে

দুজন কর্তার মধ্যে এক‌ই ক্রিয়ার পারস্পরিক বিনিময় ঘটলে ওই দুই কর্তাকে ব্যতিহার কর্তা বলে। ব্যতিহার কর্তা সব সময় জোড়ায় থাকে। অধিকাংশ সময় দুজনের প্রতিযোগিতা বোঝায়। খুব অল্প ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা থাকে না। যেমন: আলিঙ্গন, করমর্দন ইত্যাদি কাজের ক্ষেত্রে ব্যতিহার কর্তা পাওয়া গেলেও প্রতিযোগিতা থাকে না‌।

ব্যতিহার কর্তার উদাহরণ:

রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়। ভাইয়ে ভাইয়ে ঝগড়া করছে। পণ্ডিতে পণ্ডিতে তর্ক হয়। বাঘে সিংহে লড়াই লেগেছে। কবিতে লেখকে আলিঙ্গন হল। মন্ত্রীতে মন্ত্রীতে করমর্দন হচ্ছে।

৫: সহযোগী কর্তা – কাকে বলে

একাধিক কর্তা পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এক‌ই ক্রিয়া সম্পন্ন করলে তাদের বলে সহযোগী কর্তা। 

ব্যতিহার কর্তার সাথে সহযোগী কর্তার পার্থক্য হল, সহযোগী কর্তা দুজন মিলে এক‌ই কাজ করে। দুজনের কাজের অভিমুখ বা অভীষ্ট একটাই হয়। এখানে বিনিময় নেই। 

উদাহরণ: ভাইয়ে-ভাইয়ে পরামর্শ করছে। বাঘে-গোরুতে এক ঘাটে জল খায়। মা-মেয়ে রান্না করছে।

৬: নিরপেক্ষ কর্তা – কাকে বলে

বাক্যের সমাপিকা ক্রিয়া ও অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তা আলাদা হলে অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তাকে নিরপেক্ষ কর্তা বলে। 

শর্তসাপেক্ষ বাক্যে অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তাটি কার‌ও অপেক্ষা করে না, নিজেই ক্রিয়া সম্পাদন করে। যেমন: “সমীর এলে শুভময় যাবে।” এই বাক্যে শুভময় সমীরের আসার অপেক্ষা করলেও সমীর কার‌ও অপেক্ষা করছে না, সে নিজের ইচ্ছাধীন। তাই সমীর নিরপেক্ষ কর্তা।

উদাহরণ: তুমি এলে আমি যাবো। সূর্য উঠলে পদ্ম ফুটবে।

৭: সমধাতুজ কর্তা 

ক্রিয়া ও কর্তা এক‌ই ধাতু থেকে নিষ্পন্ন হলে সেই কর্তাকে সমধাতুজ কর্তা বলে।

উদাহরণ: খেলোয়াড় খেলে। লেখক লেখেন। পড়ুয়া পড়ছে। 

খেলোয়াড় কর্তাটি ‘খেল্’ ধাতু থেকে এসেছে, খেলে ক্রিয়াটিও ‘খেল্’ ধাতু থেকে এসেছে।

৮: বাক্যাংশ কর্তা

একটি বাক্যাংশ যখন বাক্যের কর্তা রূপে কাজ করে তখন তাকে বাক্যাংশ কর্তা বলে। 

উদাহরণ: তোমার হঠাৎ চলে যাওয়া আমাকে দুঃখ দিয়েছে। 

বিরাটের দারুণ খেলা আজ ভারতকে জেতাাল।

৯: উপবাক্যীয় কর্তা

জটিল বাক্যের একটি উপবাক্য বা খণ্ডবাক্য যখন কর্তা রূপে কাজ করে তখন তাকে উপবাক্যীয় কর্তা বলে।

উদাহরণ: যাদের খিদে পেয়েছে চলে এসো।

মনুষ্যত্ব‌ই শেষ কথা ছিলো তাঁর জীবনের আদর্শ।

১০: সাধন কর্তা

করণ যখন কর্তা রূপে কাজ করে তখন তাকে সাধন কর্তা বলে। 

উদাহরণ: ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে।

ছুরি ফল কাটতে পারলেও মাংস কাটতে পারে না।

লাল টিপটা তোমাকে আর‌ও সুন্দর করে তুলেছে।
আশি সালের সাইকেলটা আজ‌ও আমাকে ব‌ইছে।

১১: হেতু কর্তা কাকে বলে

ক্রিয়া সম্পাদনের কারণটি যখন কর্তা রূপে কাজ করে, তখন তাকে হেতু কর্তা বলে। 
উদাহরণ: ম্যালেরিয়াতে তার শরীরটা ভেঙে দিল। ম্যালেরিয়া আসলে শরীর ভেঙে পড়ার হেতু, কিন্তু ম্যালেরিয়া এখানে বাক্যের কর্তা রূপে কাজ করছে।

কর্ম কারক

কর্ম হল ক্রিয়ার আশ্রয়। ক্রিয়ার কাজটি যাকে আশ্রয় করে সম্পাদিত হয় তাকে কর্ম বলে। ক্রিয়ার কাজটি কর্মের উপর প্রযুক্ত হয়। কর্ম‌ই ক্রিয়ার দ্বারা সরাসরি প্রভাবিত হয়। যেমন আমি যদি ভাত খাই, তবে খাওয়া কাজটি ভাতের উপরেই প্রয়োগ করছি। ভাত‌ই আমার কাজের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে, ভাত‌ই ক্রিয়াটির আশ্রয়। সাধারণ ভাবে ক্রিয়াকে ‘কী’ বা ‘কাকে’ যোগে প্রশ্ন করলে উত্তরে কর্ম পাওয়া যায়। তবে এই ভাবে প্রশ্নের দ্বারা কর্ম নির্ণয় করার সময় খেয়াল করে কর্তাটি আগেই খুঁজে নিতে হবে। অন্যথায় কর্তা যদি জড় পদার্থ হয়, তবে ‘কী’ প্রশ্নের উত্তরে ঐ জড় কর্তা চলে আসবে। তাই আগে কর্তা নির্ণয় করার পরেই কর্ম নির্ণয় করা ভালো। এছাড়া ‘কাকে’ প্রশ্নের জবাবে প্রযোজ্য কর্তাও আসে। এই ব্যাপারটি খেয়াল রাখার জন্য দেখে নিতে হবে ক্রিয়াটি প্রযোজক ক্রিয়া কিনা। প্রযোজক ক্রিয়া সম্পর্কে জানার জন্য  এই ব্লগের ক্রিয়াপদ অধ্যায়টি পড়ে দেখুন। 

কর্ম কারকের প্রকারভেদ

১: মুখ্য কর্ম ও গৌণ কর্ম

এক‌ই ক্রিয়ার দুটি কর্মের মধ্যে একটি জড়বাচক ও অপরটি প্রাণীবাচক হলে জড়বাচক কর্মটি মুখ্য কর্ম ও প্রাণীবাচক কর্মটি গৌণ কর্ম হয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এখানে জড়বাচকটি মুখ্য হয়, প্রাণীটি হয় গৌণ। কারণ, ক্রিয়ার কাজটি মুখ্যত জড়বস্তুর উপরেই প্রযুক্ত হয়। 

মনে রাখতে হবে, গৌণ ও মুখ্য কর্ম সব সময় একটিই ক্রিয়ার কর্ম হয়। এই ক্রিয়াগুলিকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলা হয়। তবে এই প্রসঙ্গে একটি কথা বলে রাখি: জড়বাচক মানে সবসময় জড় নাও হতে পারে। প্রাণীও জড়ের ভূমিকায় থাকতে পারে। যেমন: রাজা রাজপুত্রকে একশত হাতি দিলেন। এখানে হাতি প্রাণী হলেও মুখ্য কর্ম, রাজপুত্র গৌণ কর্ম। 

মুখ্য ও গৌণ কর্মের উদাহরণ: 

সুকান্ত আমাকে কথাটা বলেছে। এখানে ‘কথাটা’ মুখ্য কর্ম, ‘আমাকে’ গৌণ কর্ম। 

দিলীপ তোমাকে কলমটা দিয়েছে। ‘কলমটা’ মুখ্য কর্ম, ‘তোমাকে’ গৌণ কর্ম।

২: উদ্দেশ্য কর্ম ও বিধেয় কর্ম

এক‌ই ক্রিয়ার একটি বিভক্তিযুক্ত প্রধান কর্ম ও তার পরিপূরক বিভক্তিহীন একটি কর্ম থাকলে বিভক্তিযুক্ত প্রধান কর্মটিকে উদ্দেশ্য কর্ম ও বিভক্তিহীন পরিপূরক কর্মটিকে বিধেয় কর্ম বলে। 

যেমন: দুটো টাকা কামিয়ে তুমি ধরাকে সরা মনে করছো। এখানে প্রধান কর্ম হল ‘ধরা’ , ‘সরা’ তার পরিপূরক। ‘ধরা’ উদ্দেশ্য কর্ম, ‘সরা’ বিধেয় কর্ম।

গলা শুনে বিকাশকে আমি সুজয় মনে করেছি। এখানে প্রকৃত কর্ম ‘বিকাশ’ , এটি উদ্দেশ্য কর্ম এবং তার পরিপূরক ‘সুজয়’, এটি বিধেয় কর্ম ‌। দেখা যাচ্ছে উদ্দেশ্য কর্মে বিভক্তি আছে ও বিধেয় কর্মে নেই।

৩: উপবাক্যীয় কর্ম : কাকে বলে ও উদাহরণ

জটিল বাক্যের অপ্রধান খণ্ডবাক্যটি যদি সমগ্র বাক্যের কর্ম রূপে ব্যবহৃত হয় তাহলে তাকে উপবাক্যীয় কর্ম বলে। 

যেমন: আমি জানতাম আজ বৃষ্টি হবে। কী জানতাম? উঃ আজ বৃষ্টি হবে। এই পুরোটাই কর্ম। 

আমি দেখলাম লোকটা ছুটে পালাচ্ছে। কী দেখলাম? উঃ লোকটা ছুটে পালাচ্ছে। 

৪: বাক্যাংশ কর্ম : কাকে বলে ও উদাহরণ

বাক্যাংশ বলতে বোঝায় সমাপিকা ক্রিয়াহীন পদগুচ্ছ, যা একটি পদের কাজ করে। এমন একটি বাক্যাংশ যখন বাক্যের কর্ম রূপে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে বাক্যাংশ কর্ম বলে। 

যেমন: আমি লোকটিকে ছুটে পালাতে দেখেছি। (উপবাক্যীয় কর্মের সাথে পার্থক্য লক্ষণীয়) কী দেখেছি? উঃ লোকটিকে ছুটে পালাতে। তোমার সারাদিন খেলে বেড়ানো আমি বরদাস্ত করবো না।

এই কর্মগুলির মধ্যে সমাপিকা ক্রিয়া নেই এবং এরা একটিই পদের কাজ করছে। তাই এরা বাক্যাংশ।

৫: সমধাতুজ কর্ম : কাকে বলে ও উদাহরণ

বাক্যের ক্রিয়াপদ ও কর্ম যদি এক‌ই ধাতু থেকে নিষ্পণ্ণ হয়, তাহলে ঐ কর্মকে সমধাতুজ কর্ম বলে। 

যেমন: দারুণ খেলা খেলল ছেলেটা। এখানে ‘খেলা’ কর্ম ও ‘খেলল’ ক্রিয়া এক‌ই ধাতু থেকে নিষ্পণ্ণ, খেল্ ধাতু।

এক‌ই রকম উদাহরণ: লম্বা ঘুম ঘুমালাম। খুব হাঁটা হেঁটেছি‌। কী হাসিটাই হাসলাম। 

এখানে মনে রাখতে হবে যে, ক্রিয়া যে ধাতু থেকে এসেছে, কর্মটি একদম সেই ধাতু থেকেই আসতে হবে, সমার্থক ধাতু থেকে এলে সমধাতুজ হবে না। যেমন: “সে আজ দারুণ নৃত্য নাচল” এখানে সমধাতুজ কর্ম হবে না। কারণ, √নাচ্ একটি বাংলা বা তদ্ভব ধাতু এবং নৃত্য কথাটি সংস্কৃত √নৃৎ ধাতু থেকে এসেছে। আর একটি মনে রাখার মতো কথা হলো, সমধাতুজ কর্ম এমন‌ই এক কর্ম যা অকর্মক ক্রিয়াকেও সকর্মক করে দিতে পারে। উপরে তেমন উদাহরণ দেওয়া আছে, খুঁজে দেখুন।

৬: অসমাপিকা ক্রিয়ারূপী কর্ম

একটি ইতে-প্রত্যয়ান্ত অসমাপিকা ক্রিয়া (তুমর্থ অসমাপিকা) যখন বাক্যে কর্মের ভূমিকা পালন করে তখন তাকে অসমাপিকা ক্রিয়ারূপী কর্ম বলে।

যেমন: আমি খেতে ভালোবাসি। তুমি পড়তে ভালোবাসো। তারা একবার দেখতে চায়।

৭: কর্মের বীপ্সা

বাক্যের কর্মটি যখন পর পর দু’বার ব্যবহৃত হয় তখন তাকে কর্মের বীপ্সা বলে।

যেমন: কথাটা জনে জনে বলেছি। 

৮: অক্ষুণ্ন কর্ম : কাকে বলে ও উদাহরণ

কর্তৃবাচ্য থেকে কর্মবাচ্য করার সময় কর্মকে উদ্দেশ্য বা কর্তার স্থানে স্থাপন করা হয়, ফলে কর্মকে কর্তার মতো মনে হয়। কর্মে বিভক্তি থাকলে রূপান্তরের সময় সেটি বাদ দিতে হয়, কর্মটি শূন্য বিভক্তি গ্রহণ করে। কিন্তু ক্রিয়াটি যদি দ্বিকর্মক হয়, তখন একটি কর্ম উদ্দেশ্য স্থানে গেলেও অপর কর্মটি কর্ম রূপেই বাক্যে থেকে যায়। তার বিভক্তি থাকলে সেটিও রয়ে যায়‌‌। বাচ্য পরিবর্তনের পরেও যে কর্মটি অপরিবর্তিত বা অক্ষুণ্ন থাকে, তাকে অক্ষুণ্ন কর্ম বলে। 

যেমন: কর্তৃবাচ্য: আমি রামকে  উপহারটি দিলাম। 

কর্মবাচ্য: রাম আমার দ্বারা উপহারটি প্রদত্ত হল।

উপরের উদাহরণে দুটি কর্ম আছে। তার মধ্যে একটি কর্তার জায়গা দখল করছে এবং অন্যটি কর্ম হিসেবেই থাকছে।

এখানে ‘রাম’ কর্মটি উদ্দেশ্যের স্থানে গেছে কিন্তু ‘উপহার’ অপরিবর্তিত আছে কর্ম রূপেই, তাই এক্ষেত্রে ‘উপহার’ অক্ষুণ্ন কর্ম। আবার বাচ্য পরিবর্তন করার সময় যদি এমন করি: “উপহারটি আমার দ্বারা রামকে প্রদত্ত হল।” তাহলে ‘রামকে’ অক্ষুণ্ন কর্ম। কারণ এই কর্মটি অপরিবর্তিত রয়েছে।

এই বিষয়টি ভালো করে বোঝার জন্য আগে বাচ্য অধ্যায়টি পড়ুন ।

করণ কারক 

কর্তা যার সাহায্যে, যে উপায়ে বা যে কারণে ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে করণ কারক বলে।

করণ হল ক্রিয়া সম্পাদনের সহায়ক, হেতু, উপায়, লক্ষণ ইত্যাদি।

করণ কারকের প্রকারভেদ

১: যন্ত্রাত্মক করণ

কর্তা যখন কোনো বস্তুকে ক্রিয়া সম্পাদনের যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে তখন সেই বস্তুকে বলে যন্ত্রাত্মক করণ‌।

উদাহরণ: ছুরি দিয়ে ফল কাটছি। চামচ দিয়ে ভাত খাবো। কৃষক লাঙল দিয়ে মাটি চষে। আমরা চোখ দিয়ে দেখি।(দেহের অঙ্গ‌ও যন্ত্র)

মনে রাখতে হবে: বস্তু হলেই যন্ত্রাত্মক করণ হবে, এমন কোনো কথা নেই। বস্তুটিকে যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। যেমন: টাকায় সব হয়। এখানে টাকা করণ হলেও যন্ত্রাত্মক করণ নয়। কেন না, টাকার বস্তুমূল্য কোনো কাজে লাগে না, কাজে লাগে তার বিনিময়-মূল্যটি। অবশ্য একশো টাকার একটা নোট দিয়ে কেউ যদি মাছি তাড়ায় তাহলে টাকাও যন্ত্র হতে পারে।

২: উপায়াত্মক করণ

কর্তা যে উপায়ে ক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে উপায়াত্মক করণ বলে। উপায় মূর্ত অথবা বিমূর্ত, দুইই হতে পারে।

উদাহরণ: বুদ্ধি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। কৌশলে আমাকে এড়িয়ে গেলো। টাকায় সব হয় না। কোন পথে সমস্যার সমাধান হবে? 

ভালোবাসা দিয়ে কাছে টানতে হবে।

৩: হেতুবাচক/হেত্বর্থক/হেতুময়/কারণবাচক করণ

কর্তা যে কারণে ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে হেতুবাচক করণ বলে।

উদাহরণ: ভয়ে পালিয়েছি। দুঃখে ভেঙে পড়লেন।

লজ্জায় কেঁদে ফেলল। শরমে ক‌ইতে নারি।

৪: সমধাতুজ করণ

সমধাতুজ’ কথার অর্থ হল, এক‌ই ধাতু থেকে যার জন্ম।

ক্রিয়াপদ ও করণ যদি এক‌ই ধাতু থেকে সৃষ্টি হয়, তবে সেই করণকে সমধাতুজ করণ বলে। 

উদাহরণ: শক্ত বাঁধনে বেঁধেছি। লেখনী দিয়ে লিখি। 

ঝাড়ন দিয়ে ঘর ঝাড়লাম।

৫: কালাত্মক করণ

কর্তা ক্রিয়া সম্পাদনের জন্য যে পরিমাণ সময় ব্যয় করে সেই সময়কে কালাত্মক করণ বলে।

উদাহরণ: ব‌ইটা দুদিনে শেষ করেছি। একঘণ্টায় ফিরে আসবো। 

কালাত্মক করণ ও কালাধিকরণের পার্থক্য

মনে রাখতে হবে, কালাত্মক করণ সময়ের পরিমাণ বোঝাবে এবং কালাধিকরণ সময়টাকে বোঝাবে। কত সময়ে কাজটি হলো বোঝালে সময়টি করণ হবে এবং কখন কাজটি হলো বোঝালে সময়টি অধিকরণ হবে।

৬: লক্ষণাত্মক করণ

যে লক্ষণ দেখে চেনা যায়, তাকে লক্ষণাত্মক করণ বলে।

উদাহরণ: কলমে কায়স্থ চিনি, গোঁফেতে রাজপুত। শিকারি বেড়াল গোঁফে চেনা যায়। কাঁঠাল চোরের কাঁধে মালুম। রং দিয়ে মানুষ চেনা যায় না।

৭: উপাদানবাচক করণ

যে উপাদান দিয়ে কোনো কিছু তৈরি হয় সেই উপাদানটিকে উপাদানবাচক করণ বলে।

যেমন: আটা দিয়ে রুটি হয়‌। ইট দিয়ে বাড়ি তৈরি হয়। 

৮: সহকার অর্থে করণ

যার সহযোগে বা সহকারে ক্রিয়া সম্পাদিত হয়, তাকে সহকার অর্থে করণ বলা হয়।

উদাহরণ: মাংস দিয়ে ভাত খেয়েছি। (মাংস-ভাত খেয়েছি বললে ‘মাংস-ভাত’ কর্ম হবে)।

সজল চোখে সে বিদায় নিল। (সজল চোখের সহকারে)

৯: অঙ্গবিকারমূলক করণ

কোনো অঙ্গে বিকৃতি বোঝালে সেই অঙ্গটির করণ কারক হয়‌। একেই অঙ্গবিকারমূলক করণ বলে।

উদাহরণ: লোকটা পায়ে খোঁড়া। আমি কানে খাটো।

১০: করণের বীপ্সা

করণ কারকপদটি পর পর দু’বার ব্যবহৃত হলে তাকে বলা হয় করণের বীপ্সা।

যেমন: মেঘে মেঘে আকাশ ভরে উঠেছে। চারিদিক জলে জলে ভরে উঠেছে।

নিমিত্ত কারক : কাকে বলে ও শ্রেণিবিভাগ

যে জন্য বা যার জন্য বা যে উদ্দেশ্যে ক্রিয়া সম্পাদিত হয় তাকে নিমিত্ত কারক বলে।

নিমিত্ত দুই প্রকার হয়: 

১: অভিপ্রায় নিমিত্ত

কর্তা যে অভিপ্রায়ে ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে অভিপ্রায় নিমিত্ত বলে।
যেমন: রাজা যুদ্ধে গেছেন। বাবা কাজে বেরিয়েছেন। চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হবে। 

২: ফলভোগী নিমিত্ত

যার জন্য ক্রিয়ার কাজ করা হয়, ক্রিয়া সম্পাদনের ফল যে ভোগ করে, তাকে ফলভোগী নিমিত্ত বলে।

যেমন: দেশের জন্য প্রাণ দেবো। তোমার জন্য জামা এনেছি। 

বর্তমানে সম্প্রদান কারককে বাংলা ব্যাকরণ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অনেকেই ভুলবশত আগেকার  সম্প্রদান কারককে নিমিত্ত কারকের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেন। কিন্তু তা ঠিক নয়, সম্প্রদান কারক আসলে গৌণ কর্ম।

করণ ও নিমিত্ত কারকের পার্থক্য

মনে রাখতে হবে: ‘জন্য’ অনুসর্গ কারণ এবং উদ্দেশ্য, দুটি বোঝাতেই ব্যবহার করা হয়। কারণ বোঝাচ্ছে নাকি উদ্দেশ্য বোঝাচ্ছে তা ভালো করে বুঝে নিয়েই কারক করতে হবে। যেমন: “তোমার জন্য আমার সব কাজ পণ্ড হল।” এখানে ‘তোমার জন্য’-তে করণ কারকে ‘জন্য ‘অনুসর্গের প্রয়োগ ঘটেছে। তুমি এখানে আমার কাজ পণ্ড হ‌ওয়ার কারণ। আবার “তোমার জন্য একটা কলম এনেছি।” এখানে ‘তুমি’ নিমিত্ত। কারণে করণ, উদ্দেশ্যে নিমিত্ত।



অপাদান কারক


অপাদান বলতে বোঝায় যেখান থেকে, যখন থেকে বা যা থেকে ক্রিয়া সম্পন্ন হয়। 
অপাদান কারকে কর্তা বা কর্মের বিচ্যুতি বোঝায়, ক্রিয়ার প্রারম্ভ বোঝায়, স্থানের দূরত্ব বোঝায়, সূত্রপাতের স্থান বোঝায়, প্রাপ্তি বা ভীতি ইত্যাদির উৎস বোঝায়‌।

অপাদানের শ্রেণিবিভাগ


১: স্থানবাচক অপাদান

 যে স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর, পতন, নির্গমন, বিচ্যুতি, স্খলন, আরম্ভ ইত্যাদি বোঝায় সেই স্থানকে স্থানবাচক অপাদান বলে।

যেমন: মাথা থেকে বোঝা নামলো। পকেট থেকে টাকা পড়েছে। ট্রেন হাওড়া ছাড়লো।


২: উৎসবাচক অপাদান

 যে উৎস থেকে কোনো কিছু সৃষ্টি হয় বা সংগৃহীত হয়, তাকে উৎসবাচক অপাদান বলে।

যেমন: তিলে তেল হয়। কালো মেঘে বৃষ্টি হয়। গোমুখ থেকে গঙ্গা উৎপন্ন হয়েছে। আমি বাঘে ডরাই না।(বাঘ ভয়ের উৎস)


৩: অবস্থানবাচক অপাদান

কর্তা কোনো অবস্থানে থেকে দূরবর্তী কর্মের উপর ক্রিয়া সম্পাদন করলে সেই স্থানকে অবস্থানবাচক অপাদান বলে। 
যেমন: ছাদ থেকে ঘুড়ি ওড়াচ্ছি। সে কলকাতা থেকে ফোন করেছে। বাড়ি থেকেই ব্যবসা চালাই।


৪: কালবাচক অপাদান

যে সময় ক্রিয়ার কাজটি শুরু হয় সেই সময়টি কালবাচক অপাদান। 

যেমন: সকাল থেকে পড়ছি। কাল থেকে পরীক্ষা শুরু হবে।


৫: রূপান্তর বা বিকৃতিমূলক অপাদান

এক জিনিস থেকে অন্য জিনিসে রূপান্তর বোঝালে প্রথম জিনিসটিকে অপাদান কারক ধরা হয়।

যেমন: তোমাকে মানুষ থেকে অমানুষ করল কে? বাল্মীকি ডাকাত থেকে ঋষি হলেন।


৬: দূরত্ববাচক অপাদান

এক স্থান থেকে অপর স্থানের দূরত্ব বোঝাতে এই অপাদান হয়।

যেমন: বাঁকুড়া থেকে কলকাতা ২০০ কিমি। এখান থেকে কলকাতা কাছেই।


৭: তুলনাবাচক অপাদান

দুইয়ের মধ্যে তুলনা বোঝাতে ‘চেয়ে’, ‘থেকে’ ‘অপেক্ষা’ প্রভৃতি অনুসর্গ-বিশিষ্ট পদটির অপাদান কারক হয়। একেই তুলনাবাচক অপাদান বলে।

যেমন: তোমার চেয়ে আমি বড়ো। রাজুর চেয়ে ঋজু বেশি ফর্সা।

অধিকরণ কারক

অধিকরণ হল ক্রিয়ার আধার। যে স্থান, কাল, বিষয় বা ভাবের মধ্যে ক্রিয়া সম্পাদিত হয়, তাকে অধিকরণ বলে। 

অধিকরণকে প্রাথমিক ভাবে দুই ভাগে ভাগ করা হয়: ১: আধার অধিকরণ ও ২: ভাবাধিকরণ।

আধার অধিকরণ তিন প্রকার: স্থানাধিকরণ, কালাধিকরণ ও বিষয়াধিকরণ।

স্থানাধিকরণ: যে স্থানে ক্রিয়ার কাজটি সম্পন্ন হয়, তাকে স্থানাধিকরণ বলে।

যেমন: বাবা বাড়ি নেই। আমি স্কুলে পড়ি।

স্থানাধিকরণ

ক্রিয়ার কাজ যে স্থানের ভিতর সম্পাদিত হয়, তাকে স্থানাধিকরণ বলে। স্থানাধিকরণ ৩ প্রকার:

ব্যাপ্তাধিকরণ বা ব্যপ্তিসূচক স্থানাধিকরণ

 ক্রিয়ার কাজটি সমগ্র স্থান জুড়ে সংঘটিত হলে তাকে ব্যাপ্তাধিকরণ বলে। যেমন: সমুদ্রে জল আছে।(পুরো সমুদ্রে)

ঐকদেশিক স্থানাধিকরণ

কোনো একটি স্থানের অন্তর্গত কোনো একটি বিন্দুতে ক্রিয়ার কাজ সম্পন্ন হলে ঐ স্থানকে ঐকদেশিক স্থানাধিকরণ বলে।  যেমন: তিনি কলকাতায় থাকেন। অর্থাৎ কলকাতার কোনো একটি জায়গায় থাকেন।

নৈকট্যসূচক স্থানাধিকরণ: কোনো স্থানের নিকটে ক্রিয়া সম্পাদিত হলে সেই স্থানকে নৈকট্যসূচক স্থানাধিকরণ বলে। যেমন: জি.টি. রোডে আমার বাড়ি।

কালাধিকরণ

কালাধিকরণ‌ও দুই প্রকার: মুহূর্তাধিকরণ এবং ব্যাপ্তাধিকরণ

মুহূর্তাধিকরণ: ক্রিয়ার কাজটি এক মুহূর্তে সম্পাদিত হলে সেই সময়কে মুহূর্তাধিকরণ বলে। যেমন: লোকটি সকালে মারা গেছে।

ব্যাপ্তাধিকরণ: ক্রিয়ার কাজ দীর্ঘ সময় জুড়ে হয়ে থাকলে সেই সময়কে ব্যাপ্তাধিকরণ বলে। যেমন: আমি সকালে পড়েছি।(এই কাজটিও সকালে কিন্তু এক মুহূর্তে নয়)

বিষয়াধিকরণ

ক্রিয়ার কাজ যে বিষয়ে সম্পাদিত হয়, তাকে বিষয়াধিকরণ বলে। 

যেমন: অঙ্কে তার মাথা আছে। গানবাজনায় সে খুব ভালো।

রান্নায় সে ওস্তাদ। পড়াশোনায় তার মন নেই। খেলাধূলায় তার দক্ষতা আছে। কাজে মন দাও।

ভাবাধিকরণ

ক্রিয়ার কাজটি কোনো বিমূর্ত ভাব বা কাজকে মধ্যে আধার করে সম্পাদিত হলে তাকে ভাবাধিকরণ বলে। 

যেমন: রাজা বিলাসিতায় মগ্ন। আমি দুঃখে ডুবে আছি।
কথাটা গোলমালে হারিয়ে গেল। ঋষিমশাই ধ্যানে মগ্ন। ঋণে ডুবে আছি। 


অকারক পদ

কারকের আলোচনায় আমরা দেখেছি ক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক আছে এমন বিশেষ্য ও সর্বনাম পদগুলিকে বলে কারকপদ। কারকপদের পাশাপাশি বাক্যে এমন পদ‌ও দেখা যায়, যারা ক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক রাখে না কিন্তু কোনো কারকপদের সাথে সম্পর্ক রাখে‌। এই পদগুলিকেই অকারক পদ বলে। অকারক পদ দুই প্রকার: সম্বন্ধ পদ ও সম্বোধন পদ।



সম্বন্ধ পদ

সম্বন্ধ পদ কাকে বলে

সাধারণত র/এর বিভক্তি-যুক্ত যে বিশেষ্য ও সর্বনাম পদগুলি ক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত না হলেও কোনো না কোনো কারকপদের সাথে সম্পর্ক রাখে, তাদের সম্বন্ধ পদ বলে। 

যেমন: “রামের ভাই খেলছে।” বাক্যটিতে খেলা কাজটি রাম করছে না, রামের সাথে ক্রিয়ার যোগ নেই কিন্তু রামের সাথে কর্তা ‘ভাই’-এর সম্পর্ক আছে। ভাই কারকপদ এবং ভাইয়ের সঙ্গে রামের সম্পর্ক আছে, তাই ‘রামের’ পদটি সম্বন্ধ পদ। 

সম্বন্ধ পদ বিভিন্ন প্রকারের হয়। প্রকৃত পক্ষে সম্বন্ধ পদের এত বিচিত্র প্রয়োগ বাংলায় দেখা যায় যে এর প্রতিটি শ্রেণি চিহ্নিত করা অত্যন্ত দুরূহ কাজ‌।

সম্বন্ধ পদ কারক নয় কেন?

সম্বন্ধ পদ কারক নয়, কারণ সম্বন্ধ পদের সঙ্গে ক্রিয়াপদের সরাসরি সম্পর্ক থাকে না। যেমন: “রামের ভাই খেলছে।” এই উদাহরণে ‘রামের’ পদটি সম্বন্ধ পদ এবং ক্রিয়াপদ ‘খেলছে’। এখন একটু ভাবলেই বোঝা যাবে ‘রামের’ পদটির সঙ্গে ‘খেলছে’ ক্রিয়ার কোনো যোগ নেই। তবে ‘ভাই’ পদটির সঙ্গে ‘রামের’ পদটির যোগ‌ আছে।

 সম্বন্ধ পদের শ্রেণিবিভাগ ও উদাহরণ 

  • অধিকার সম্বন্ধ: আমার বাড়ি।
  • কর্তৃ সম্বন্ধ: শচীনের খেলা।
  • কর্ম সম্বন্ধ: গুরুজনের অপমান।
  • করণ সম্বন্ধ: সড়কির আঘাত।
  • নিমিত্ত সম্বন্ধ: স্নানের ঘর।
  • অপাদান সম্বন্ধ: মেঘের জল।
  • অধিকরণ সম্বন্ধ: ঘরের ছেলে।
  • উপাদান সম্বন্ধ: মাটির পুতুল।
  • উৎপাদক সম্বন্ধ: ফণী ময়রার মিষ্টি।
  • স্থান সম্বন্ধ: কলকাতার ভাষা।
  • আধার-আধেয় সম্বন্ধ: কলসীর জল।
  • আধেয়-আধার সম্বন্ধ: জলের কলসী‌।



সম্বোধন পদ

যে বিশেষ্য পদের দ্বারা কাউকে ডাকা হয় বা সম্বোধন করা হয়, তাকে সম্বোধন পদ বলে। এর সাথে ক্রিয়ার কোনো যোগ থাকে না বলে একে অকারক পদ বলা হয়। সম্বোধন পদ বাক্যের মূল গঠনের অন্তর্গত নয়। এই পদটি ব্যবহার করা হয় শ্রোতার মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য।

সম্বোধন পদের উদাহরণ:

১: মা, আমাকে জল দাও।
২: ভাই, একটু সরে দাঁড়ান।
৩: আমি কি ডরাই সখি, ভিখারী রাঘবে!
৪: ওহে মানুষ, সতর্ক হ‌ও।

সম্বোধন পদ ও সম্বোধনসূচক অব্যয়ের পার্থক্য

উপরে ৪ নং উদাহরণের ‘ওহে’ পদটি সম্বোধনসূচক অব্যয়। সম্বোধনসূচক অব্যয়ের সাথে সম্বোধন পদের পার্থক্যটি ভালো করে বুঝে নিতে হবে। সম্বোধন পদ সর্বদা বিশেষ্য পদ হয়। অন্য কারক বা অকারকগুলি বিশেষ্য ছাড়া সর্বনাম‌ও হতে পারে কিন্তু সম্বোধন পদ শুধু বিশেষ্য‌ই হয়। ওরে, রে, ওগো, ওলো, ওহে, হে প্রভৃতি পদগুলি সম্বোধনসূচক অব্যয়। এরা সম্বোধন পদ নয়। “ও ভাই, এদিকে এসো।” – এই বাক্যে ‘ও’ পদটি সম্বোধনসূচক অব্যয় এবং ‘ভাই’ পদটি সম্বোধন পদ।

FAQ

১: কারক কাকে বলে?
উঃ ক্রিয়াপদের সঙ্গে বাক্যের বিশেষ্য ও সর্বনাম পদের সম্পর্ককে কারক বলে।
২: অনুসর্গের অপর নাম কী?
উঃ অনুসর্গের অপর নাম পরসর্গ, কর্মপ্রবচনীয় বা সম্বন্ধীয়।
আমাকে YouTube-এ ফলো করার জন্য এখানে ক্লিক করুন।

আর‌ও পড়ুন 



BLOG AD HERE

8 thoughts on “কারক ও বিভক্তি এবং অনুসর্গ: বিস্তারিত আলোচনা | কারক”

  1. ছেলেরা (তাস) খেলে।
    ছেলেরা (ক্রিকেট) খেলে।
    এখানে তাস এবং ক্রিকেট কোন কারকে কোন বিভক্তি এবং ভিন্নতার কারণ ব্যাখ্যা করলে উপকৃত হব। ধন্যবাদ।

  2. তাস খেলার উপকরণ, উপকরণে করণ হয়। উপকরণ নামের মধ্যেই করণ আছে। খেলার নাম ক্রিকেট। কী খেলছে? ক্রিকেট। তাই এটি কর্ম। উভয় ক্ষেত্রেই শূন্য বিভক্তি।

  3. নামহীন

    কবিতে লেখকে আলিঙ্গন হল,
    মন্ত্রীতে মন্ত্রীতে করমর্দন হচ্ছে ..
    এগুলো কি সহযোগী কর্তার উদাহরণ হবে না? একটু পরিষ্কার করে বোঝাবেন স্যার

  4. নামহীন

    কবিতে লেখকে আলিঙ্গন হল,
    মন্ত্রীতে মন্ত্রীতে করমর্দন হচ্ছে ..
    এগুলো কি সহযোগী কর্তার উদাহরণ হবে না? একটু পরিষ্কার করে বোঝাবেন স্যার

  5. এগুলো ব্যতিহার কর্তা। ক্রিয়ার বিনিময় হচ্ছে। প্রতিযোগিতা না হলেও চলবে। সহযোগী কর্তা দুজন একমুখী কাজ করে।

  6. 1)বিধাতা নিজের প্রতি অসন্তোষে নতুন সৃষ্টিকে বারবার করছিলেন বিধ্বস্ত।এখানে 'অসন্তোষে'কোন কারক?
    2)তারা গর্বে অন্ধ।এখানে 'গর্বে' কোন কারক?

  7. Pingback: উপধা কাকে বলে - Ananyabangla.com

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *