উপমেয় ও উপমানের ধারণা
উপমেয় কাকে বলে
উপমেয় কথার আক্ষরিক অর্থ হল: যার উপমা করা হয়, যার উপমা দেওয়া হবে, যা উপমার যোগ্য। অর্থালঙ্কারের ক্ষেত্রে যে বস্তুর তুলনা করা হয়, তাকে উপমেয় বলে। বস্তু শব্দটি এখানে ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ব্যক্তি, প্রাণী, বস্তু, সবই এখানে বস্তু হিসেবে গণ্য হবে। উপমেয়কে প্রধান বস্তুও বলা হয়। তার কারণ উপমাতে উপমেয়ই মূল বর্ণিতব্য বিষয়। উপমেয়ের গুণ বর্ণনা করার লক্ষ্যেই উপমা করা হয়। যেমন: “চাঁদের মতো সুন্দর মুখ” বললে আমরা মুখ কত সুন্দর, সেটাই বোঝাতে চাইছি। তাই মুখই প্রধান বস্তু বা উপমেয়।
উপমান কাকে বলে
যার সাথে উপমেয়ের তুলনা করা হয়, তাকে উপমান বলে। যেমন: “আগুনের মতো গরম বাতাস” বললে বাতাসের তুলনা করা হচ্ছে আগুনের সাথে। তাই আগুন উপমান। তুলনায় উপমানের কাজ হলো উপমেয়ের গুণ বর্ণনায় সাহায্য করা। উপমানকে উপমেয়ের গুণ বর্ণনার মানদণ্ড বলা যায়।
উপমেয় ও উপমান চেনার উপায়
উপমেয় ও উপমান চেনার কয়েককটি খুব সহজ ও কার্যকরী উপায় আছে।
১: যার কথা আমরা বলতে চাইছি, সেটি হলো উপমেয়।
২: যার সাথে তুলনা, সে উপমান।
৩: উপমানকে চেনা বেশি সহজ। উপমানের ধর্ম বা গুণ সর্বজনবিদিত হয়। অর্থাৎ উপমানের গুণ সবাই জানে। যেমন: বরফের মতো ঠাণ্ডা জল। — বরফ যে ঠাণ্ডা, এ কথা সবাই জানে। তাই বরফ উপমান। চাঁদের মতো সুন্দর মুখ। — চাঁদ যে সুন্দর, তা সবাই জানে, চাঁদ উপমান। সিংহের মতো বীর যোদ্ধা। — সিংহ যে বীর, তা সবাই জানে বা মানে, তাই সিংহ উপমান।