গুচ্ছ ধ্বনি ও যুক্ত ধ্বনি কাকে বলে
গুচ্ছধ্বনি বলতে বোঝায় ব্যঞ্জনধ্বনির এমন সমাবেশ যাদের মাঝখানে কোনো স্বরধ্বনি থাকে না কিন্তু দলসীমা থাকে। অর্থাৎ, এই ব্যঞ্জনগুলি পৃথক দলের অন্তর্ভুক্ত হয়।
যেমন: ‘অস্ত’ শব্দের মধ্যেে ‘স্ত’ একটি ব্যঞ্জন-সমাবেশ। এখানে ‘স্’ ও ‘ত্’ ব্যঞ্জনদুটির মাঝে কোনো স্বর নেই কিন্তু ‘অস্ত’ শব্দটির দল ভাঙলে হবে অস্|ত। তার মানে, দেখা যাচ্ছে ‘স্’ ও ‘ত্’ ব্যঞ্জনদুটির মাঝে দলসীমা পড়ে যাচ্ছে, এরা একই দলের অন্তর্ভুক্ত নয়। বুদ্ধি, বাষ্প, নিষ্প্রাণ, তত্ত্ব, বৃত্ত, পল্লব প্রভৃতি শব্দের ব্যঞ্জনসমাবেশগুলি সবই গুচ্ছধ্বনি। গুচ্ছধ্বনি শব্দের বা দলে আদিতে থাকতে পারে না। কারণ এদের মাঝখানে একটি দল শেষ হয় এবং অপর একটি দল শুরু হয়।
সংস্কৃত, সংস্কৃতি প্রভৃতি শব্দের ংস্কৃ(উচ্চারণ: ঙ্স্ক্রি) বাংলায় উচ্চারিত গুচ্ছধ্বনি যাতে চারটি ব্যঞ্জন আছে। সংস্কৃত ‘দংষ্ট্রা’ শব্দের ‘ঙ্ষ্ট্র’-ও(অনুস্বরকে ঙ্ রূপেই উচ্চারণ করা হয়) এরকমই একটি চার-ব্যঞ্জনবিশিষ্ট গুচ্ছধ্বনি।
যুক্ত ধ্বনির বাঁধন গুচ্ছ ধ্বনির তুলনায় পাকাপোক্ত। এক্ষেত্রে ব্যঞ্জনের সমাবেশটি শব্দের আদিতে উচ্চারিত হতে পারে এবং এর মাঝে দলসীমা থাকে না। অর্থাৎ পুরো সমাবেশটি একটিই দলের অন্তর্গত হয়। এই প্রসঙ্গে একটি কথা মনে রাখতে হবে: একটি যুক্তধ্বনির অন্তর্গত ব্যঞ্জনগুলি একটিই দলের অন্তর্ভুক্ত হলেও দল গঠনের জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বরের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ অধিকাংশ ক্ষেত্রে যুক্ত ধ্বনিটি স্বরের সাহায্য ছাড়া দল গঠন করতে পারে না।
যেমন: ত্র, ক্ল, প্র, স্ত, স্থ,(তবে এই যুক্তব্যঞ্জনগুলি যদি শব্দের বা দলের আদিতে না বসে এবং এদের মাঝে দলসীমা চলে আসে, তাহলে এরাই হয়ে যাবে গুচ্ছধ্বনি। যেমন: পত্র, বিপ্র, প্রস্থ, প্রস্তর, শুক্ল প্রভৃতি শব্দে) । স্থিতি, প্রিয়, ক্লেশ প্রভৃতি শব্দে দুই-ব্যঞ্জনের যুক্তধ্বনি আছে। অপর দিকে স্ত্রী, স্পৃহা প্রভৃতি শব্দে আছে তিন-ব্যঞ্জনের যুক্তধ্বনি। কিছু বিদেশি শব্দের শেষেও যুক্তধ্বনি দেখা যায়। যেমন: কমান্ড, রিপোর্ট, রিসার্চ ইত্যাদি।
SLST বাংলা বিষয়ের প্রস্তুতির জন্য আমার সঙ্গে টেলিগ্রামে যুক্ত হোন
আরও পড়ুন