পিজিন ভাষা
একে অপরের ভাষা জানে না, এমন দুটি জাতি কাছাকাছি বসবাস করার কারণেই হোক বা অন্য কোনো কারণেই হোক, নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলতে বাধ্য হলে সাধারণত তৃতীয় একটি ভাষার সাহায্য নেয়। কিন্তু তেমন কোনো উপযুক্ত তৃতীয় ভাষাও যদি না থাকে, তাহলেও দুই জাতির কথোপকথন আটকে থাকে না। এ রকম পরিস্থিতিতে দুই জাতির মধ্যে এক ধরনের কাজ চালানো গোছের ভাষা গড়ে ওঠে। সে ভাষায় উভয় ভাষা থেকেই কিছু কিছু শব্দ নেওয়া হয় এবং অন্যান্য ভাষা থেকেও শব্দ নেওয়া হয়। এই ধরনের ভাষাকে পিজিন বলে। নিচে পিজিনের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলো।
পিজিনের বৈশিষ্ট্য
পিজিনের শব্দ সংখ্যা কম হয়, ব্যাকরণও বিশেষ থাকে না। অনেক বিষয়কে অঙ্গভঙ্গির সাহায্যেও বোঝানো হয়। পিজিন কোনো জাতির মাতৃভাষা বা প্রথম ভাষা হিসেবে গণ্য হয় না। পিজিনকে পূর্ণাঙ্গ ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। কোনো পিজিন যদি অনেক দিন ব্যবহারের পর কোনো জাতির বা কোনো অঞ্চলের অধিবাসীদের প্রথম ভাষায় পরিণত হয়, তাহলে তখন ঐ ভাষাকে আর পিজিন বলা হয় না। তখন তাকে ক্রেওল বলা হয়। ইংরেজি ‘বিজনেস’ শব্দের চিনা উচ্চারণ ‘পিজিন’। সেই থেকে এই নামটি গ্রহণ করা হয়েছে। চিনারা ভালো ইংরেজি জানে না। আবার ইংরেজরা চিনা ভাষা জানে না। তাই চিনা ও ইংরেজ বণিকদের মধ্যে ব্যবসা চালানোর জন্য পিজিন ইংরেজির জন্ম হয়। পৃথিবীর আরও বেশ কিছু অঞ্চলে পিজিন গড়ে উঠেছে। মরিশাসে যে পিজিন চালু ছিলো, তা এখন ক্রেওলে পরিণত হয়েছে এবং তার নাম হয়েছে মরিশাস ক্রেওল।