প্রশ্নোত্তরে ব্যাকরণ: প্রথম পর্ব- পদপরিচয়
বিশেষ্য
১: বাড়ি – কোন প্রকার বিশেষ্য
উঃ শ্রেণিবাচক। বাড়ির যদি বিশেষ নাম থাকে, যেমন রবীন্দ্রনাথের বাড়ি ‘শ্যামলী’ – এটি সংজ্ঞাবাচক।
২: মিলন হবে কতদিনে-কোন ধরনের বিশেষ্য?
উঃ মিলন ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য।
৩: খবরের কাগজ – কোন জাতীয় বিশেষ্য?
উঃ “আমি খবরের কাগজ পড়ছি” বললে শ্রেণিবাচক বিশেষ্য। কিন্তু খবরের কাগজকে বস্তু রূপে ব্যবহার করা বোঝালে বস্তুবাচক। যেমন: খবরের কাগজ দিয়ে ঠোঙা হয়। এখানে খবরের কাগজ বস্তুবাচক বিশেষ্য।
৪: বই – কোন প্রকার বিশেষ্য হবে?
উঃ উপরের উদাহরণের মতোই উত্তর হবে। সাধারণ অর্থে শ্রেণিবাচক, বস্তু হিসেবে ব্যবহার করা বোঝালে বস্তুবাচক।
৫: আমার গোলাপ ফুলটি চাই – এক্ষেত্রে কি গোলাপ সংজ্ঞাবাচক হবে?
উঃ গোলাপ এক ধরনের বা এক জাতের ফুল। বচন নির্দেশক দ্বারা নির্দিষ্ট করা হলেও জাতিবাচক হবে। শুধুমাত্র নামটিই যদি কোনো বিশেষ্যকে নির্দিষ্ট করে দেয়, নির্দেশকের দরকার না পড়ে, তখনই সংজ্ঞা হবে। গোলাপ শব্দটিও জাতিবাচক। গোলাপ একটিমাত্র ফুলের নাম নয়, পৃথিবীর সব গোলাপই গোলাপ, ঠিক যেমন কুকুরের মধ্যে অ্যালসেসিয়ান একটি জাতি, তেমনি ফুলের মধ্যে গোলাপ একটি জাতি।
৬: অভিজ্ঞতা – কোন ধরনের বিশেষ্য হবে?
উঃ অভিজ্ঞতা একটি ভাব। ভাববাচক বিশেষ্য। তা ও ত্ব প্রত্যয় যোগে সাধারণত গুণবাচক বিশেষ্য হয়, অভিজ্ঞতা শব্দটির গুণবাচক অর্থ হ্রাস পেয়েছে, বর্তমানে এটি একটি ধারণা রূপেই গণ্য হয়।
৭: প্রসন্নতা কী ধরনের বিশেষ্য? – ভাব না অবস্থা?
উঃ প্রসন্নতা একটি ভাব। এই ব্যাখ্যাটিও অভিজ্ঞতা শব্দের মতোই।
৮: বাঘ – জাতি বাচক বিশেষ্য কিন্তু রয়েল বেঙ্গল টাইগার কী হবে?
উঃ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারও জাতি। এটি জাতির ভিতর জাতির উদাহরণ।
৯: বুক ,আঙুল, পেট, চোখ, নাক এগুলো শরীরের অংশ ।কোন বিশেষ্য?
উঃ দেহের অঙ্গ বস্তু হয়। একক ভাবে সব অঙ্গই জড় বস্তু।
১০: বাতাস –কোন প্রকার বিশেষ্য?
উঃ বস্তুবাচক। চোখে দেখা না গেলেও বাতাস বস্তু।
১১: লাইন – কোন প্রকার বিশেষ্য ?
উঃ লাইন মানে সারি। এটি সমষ্টিবাচক।
১২: দাড়ি – কোন প্রকার বিশেষ্য?
উঃ বস্তুবাচক।
১৩: সিগারেট — কী প্রকার বিশেষ্য?
উঃ বস্তুবাচক।
১৪: কৃষি-শিল্প-বাণিজ্য — এগুলো কী ধরনের বিশেষ্য হবে?
উঃ ক্রিয়াবাচক।
১৫: ঋতু কী ধরনের বিশেষ্য হবে?
উঃ ঋতু বলতে সব ঋতুকে বোঝায়। শ্রেণিবাচক বিশেষ্য। ‘গ্রীষ্ম’ বললে সংজ্ঞাবাচক হবে।
১৭: তারুণ্য কী ধরনের বিশেষ্য হবে?
উঃ তারুণ্য তরুণের ধর্ম। তাই গুণবাচক বিশেষ্য। কিন্তু যৌবন, বার্ধক্য অবস্থাবাচক।
১৮: ইলিশ মাছ কী ধরনের বিশেষ্য ?
উঃ জাতিবাচক। ইলিশ একটি মাছের জাত।
১৯: উত্তরবঙ্গ – কোন প্রকার বিশেষ্য?
উঃ সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য। একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলকে বোঝানো হচ্ছে।
২০: বৃষ্টির ঝমঝমানি থেমেছে। – কোন প্রকার বিশেষ্য?
উঃ ধ্বন্যাত্মক বিশেষ্য।
২১: দশ থেকে পাঁচ বিয়োগ করো। – কোন প্রকার বিশেষ্য?
উঃ সংখ্যাবাচক বিশেষ্য। সংখ্যাবাচক পদ মানেই তা বিশেষণ নয়।
২২: তোমার সুখে আমি সুখী। – কোন প্রকার বিশেষ্য?
উঃ অবস্থাবাচক বিশেষ্য। দীর্ঘস্থায়ী সুখ বোঝালে অবস্থা।
২৩: তোমাকে দেখে মনে সুখ পেলাম। – কোন প্রকার বিশেষ্য?
উঃ ভাববাচক বিশেষ্য। অস্থায়ী সুখ ভাববাচক বিশেষ্য।
২৪: শ্যামলটা যে যখন তখন কোথায় চলে যায়! – কোন প্রকার বিশেষ্য?
উঃ- সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য। সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্যে কখনও কখনও টি/টা নির্দেশক যুক্ত হয়।
২৫: ভাবনায় হঠাৎ বাধা পড়লো। – কী ধরনের বিশেষ্য?
উঃ ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য। ভাবনা একটি কাজের নাম।
আরও পড়ুন
বিশেষণ
১: লোকটির নির্দয় ভাবে কথা গুলো বলে গেল- কোন ধরনের বিশেষণ?
উঃ ক্রিয়াবিশেষণ।
২: তরকারিটা জোলো লাগছে। কী পদ?
উঃ বিশেষ্যের বিশেষণ। গুণবাচকও হবে।
৩: এতটুকু দুধ – কেমন বিশেষণ?
উঃ পরিমাণবাচক বিশেষ্যের বিশেষণ।
৪: রাম বাবু মাস্টার মানুষ তিনি লোকের ঝামেলায় থাকেন না।- কোন পদ?
উঃ নাম-বিশেষণ। বিশেষ্য পদটিকে বিশেষণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
৫: তুলতুলে নরম বালিশ– কোনটি কেমন বিশেষণ?
উঃ তুলতুলে – বিশেষণের বিশেষণ, নরম – বিশেষ্যের বিশেষণ। নরম পদটি বালিশকে বিশেষিত করছে, তুলতুলে পদটি নরমকে বিশেষিত করছে।
৬: লেখালেখির আপিস-বিশেষণের প্রকার?
উঃ সম্বন্ধীয় বিশেষণ।
৭: প্রতিটি বোতামে ছাপা রয়েছে একটি করে হরফ বা সংখ্যা।
পূরণবাচক বিশেষণ হবে?
উঃ সংখ্যাবাচক বিশেষণ হবে।
৮: যাঁরা বাংলার অজ পাড়া গাঁয়ে জন্মেছেন – কোনটি কেমন বিশেষণ?
উঃ অজ- বিশেষণের বিশেষণ, পাড়া- বিশেষ্যের বিশেষণ।
৯: কালি পড়বে “ধীরে ধীরে”চুইয়ে – কোন প্রকার বিশেষণ?
উঃ ক্রিয়াবিশেষণ।
১০: শস্তার চূড়ান্ত কী পদ হবে?
উঃ চূড়ান্ত – বিশেষণের বিশেষণ। খুব সস্তা বোঝাচ্ছে।
১১: ফিনিসিয়ান আমি — কোন পদ?
উঃ সর্বনামের বিশেষণ।
১২: সকলের চোখের সামনে একটা কাচের স্ক্রিন বা পর্দা ৷ – কী ধরনের বিশেষণ?
উঃ সম্বন্ধীয় বিশেষণ। উপাদানবাচক বিশেষণ।
১৩: গরম গরম ইংরাজি – কোন প্রকার বিশেষণ?
উঃ গুণবাচক বিশেষণ। গরম, ঠাণ্ডা এগুলি সাধারণত অবস্থাবাচক বিশেষণ হয়। কিন্তু এখানে গরম কথাটির অর্থ সত্যি সত্যি গরম নয়। এখানে ‘চোখা চোখা’ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
১৪: পালকের কলম তাড়াতাড়ি ভোঁতা হয়ে যায়- কোন পদ?
উঃ ক্রিয়াবিশেষণ।
১৫: পালকের কলম তাড়াতাড়ি ভোঁতা হয়ে যায় – কোন পদ?
উঃ সম্বন্ধীয় বিশেষণ।
১৬: উনিশ শতকে বারো আনায় বত্রিশ হাজার অক্ষর লেখানো যেত – কোন শ্রেণির বিশেষণ?
উঃ পূরণ বাচক বিশেষণ। উনিশ বলতে এখানে উনিশতম শতক বা উনিশের শতক বোঝাচ্ছে।
১৭: সম্ভবত আমার যাওয়া হবে না। – কোন বিশেষণ?
উঃ ক্রিয়াবিশেষণ।
১৮: ফাউন্টেন পেন – এটা বিশেষণ হবে কি?
উঃ বিশেষণ হবে। বিশেষ্যের বিশেষণ।
১৯: গত ক’বছর ধরে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ও টাইপ-রাইটার ধরেছেন। – কী ধরনের বিশেষণ?
উঃ কৃদন্ত বিশেষণ। গম্+ক্ত = গত। বিশেষ্যের বিশেষণও হবে।
২০: এ জমি লইব কিনে। কোন প্রকার বিশেষণ হবে ?
উঃ সর্বনামীয় বিশেষণ। সর্বনাম পদ থেকে বিশেষণ পদটি নিষ্পন্ন হয়েছে। বিশেষ্য পদকে বিশেষিত করছে, তাই বিশেষ্যের বিশেষণও হবে।
২১: তিনি খুব যত্নে রেখেছেন। – কোন পদ?
উঃ ক্রিয়াবিশেষণ।
২২: লোকটা আসলে কাগুজে বাঘ। – কোন প্রকার বিশেষণ?
উঃ উপাদানবাচ বিশেষণ। বিশেষ্যের বিশেষণও হবে।
২৩: শূন্য মন্দির মোর। – কোন প্রকার বিশেষণ?
উঃ বিশেষ্যের বিশেষণ, গুণবাচক বিশেষণ। দুটিই হবে।
২৪: লোকটি গাইতে গাইতে আসছে। – কোন প্রকার বিশেষণ?
উঃ অসমাপিকা ক্রিয়াজাত ক্রিয়াবিশেষণ।
২৫: ঘড়ির কাঁটা দশের ঘর ছুঁয়েছে। – কোন প্রকার বিশেষণ?
উঃ পূরণবাচক বিশেষণ। এখানে দশম ঘর বোঝাচ্ছে।
আরও পড়ুন
বাংলা ব্যাকরণের অপরিহার্য কিছু বই