ব্যাকরণের বিভিন্ন শাখা ও তার আলোচ্য বিষয়
ব্যাকরণের কোন অংশে কোন বিষয়ের আলোচনা করা হয়, এ নিয়ে অনেকের মনেই বিভ্রান্তি আছে। ব্যাকরণের অধিকাংশ বাজারচলতি বইয়ে এই নিয়ে পরিষ্কার কোনো ধারণা দেওয়া হয়নি। অনন্য-বাংলা ব্লগের এই আলোচনাটি আশা করি সেই বিভ্রান্তি দূর করতে পারবে। এই আলোচনাতে আমরা ব্যাকরণের কোনো বিশেষ টপিকের আলোচনা করবো না, বরং কোন টপিকটি কোন ভাগে পড়বে, সেই আলোচনাই করবো। নিচে একটি তালিকার আকারে ব্যাকরণের মূল চারটি শাখা ও তাদের আলোচ্য বিষয়গুলি তুলে ধরলাম। আশা করি এই আলোচনাটি ছাত্রছাত্রীদের খুবই কাজে আসবে, কারণ এই অংশ থেকে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অনেক সময় প্রশ্ন আসতে দেখা গেছে। তাহলে আসুন, আমরা মূল আলোচনায় প্রবেশ করি।
ব্যাকরণের বিভিন্ন শাখা
ব্যাকরণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শাখাগুলি হল: ধ্বনিবিজ্ঞান, ধ্বনিতত্ত্ব, রূপতত্ত্ব , বাক্যতত্ত্ব ও শব্দার্থতত্ত্ব। প্রসঙ্গত বলে রাখি ধ্বনিবিজ্ঞান ও ধ্বনিতত্ত্ব এক বিষয় নয়। ধ্বনিবিজ্ঞানে ধ্বনির বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করা হয়। এর সঙ্গে শব্দতরঙ্গ, বিভিন্ন ধ্বনির কম্পাঙ্ক ইত্যাদি বিষয়ের যোগ রয়েছে। বাংলার সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কাছে এই বিষয়টি তত গুরুত্বপূর্ণ নয়। উচ্চতর স্তরের গবেষণাতেই এই বিজ্ঞানের প্রয়োগ হয়। তবু আমরা এর আলোচ্য বিষয়গুলি সংক্ষেপে জেনে রাখবো।
ধ্বনিবিজ্ঞান
ধ্বনিবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়গুলি হল
- বাগ্যন্ত্র ও তার গঠন এবং বাগ্যন্ত্রের অঙ্গগুলির ভূমিকা।
- স্বরধ্বনি ও ব্যঞ্জনধ্বনির উচ্চারণ-প্রক্রিয়া। অর্থাৎ স্বর ও ব্যঞ্জনগুলি ঠিক কীভাবে উচ্চারিত হয়।
- ধ্বনির তরঙ্গচিত্র ও ধ্বনিচিত্র নির্মাণ। এই বিষয়টি পদার্থবিজ্ঞানের সঙ্গে জড়িত।
ধ্বনিতত্ত্ব
ধ্বনিতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়গুলি হল:
- অবিভাজ্য ধ্বনি বা অধিধ্বনি ও বিভাজ্য ধ্বনি।
- স্বর ও ব্যঞ্জনধ্বনি এবং তাদের শ্রেণিবিভাগ তথা বর্গীকরণ।
- ধ্বনিগুচ্ছ, যুক্তধ্বনি ও গুচ্ছধ্বনি।
- মৌলিক ও যৌগিক স্বর, যুক্ত ব্যঞ্জন।
- দলের গঠন ও প্রকারভেদ।
- ধ্বনির বৈশিষ্ট্য।
- ধ্বনিপরিবর্তনের বিভিন্ন ধারা।
- বর্ণমালা ও লিপি।
- সন্ধি।
রূপতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়
ব্যাকরণে রূপতত্ত্বের বিস্তৃতি সবচেয়ে বেশি। প্রথাগত ব্যাকরণের বেশিরভাগ বিষয়ই রূপতত্ত্বের অন্তর্গত। তাই এই অংশটি বেশি গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হয়। রূপতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়গুলি হল
- শব্দ ও তার শ্রেণিবিভাগ।
- সন্ধি বাদে শব্দ গঠনের অন্যান্য কৌশল। যেমন: উপসর্গ, প্রত্যয়, সমাস।
- শব্দদ্বৈত।
- বিভক্তি, নির্দেশক, অনুসর্গ ও বিশেষ্য-বিশেষণ প্রভৃতি পাঁচটি পদ।
- কারক-বিভক্তি।
- লিঙ্গ, বচন, পুরুষ।
- বাগ্ধারা ও প্রবাদ প্রবচন।
- শব্দভাণ্ডার।
- রূপ, রূপমূল, সহরূপ।
বাক্যতত্ত্ব
বাক্যতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়গুলি হল
- বাক্যের উপাদান ও বাক্য গঠনের নিয়ম।
- বাক্যের গুচ্ছ।
- সরল, জটিল ও যৌগিক বাক্য।
- অর্থ অনুসারে বাক্যের শ্রেণিবিভাগ।
- বাক্য-পরিবর্তন।
- বাচ্য ও তার শ্রেণিবিভাগ, বাচ্য-পরিবর্তন।
শব্দার্থতত্ত্ব
- শব্দের সমার্থকতা
- বিপরীতার্থকতা
- শব্দার্থের পরিবর্তন
- অভিধা, লক্ষণা ও ব্যঞ্জনা
- এক শব্দের বহু অর্থে প্রয়োগ
↓
4 thoughts on “বাংলা ব্যাকরণ ও তার শাখা”
Pingback: মিল যুক্ত শব্দ | মিল করে শব্দ লেখ - Ananyabangla.com
Pingback: বিদেশি অনুসর্গের উদাহরণ - Ananyabangla.com
Pingback: উপবাক্যীয় কর্তা কাকে বলে - Ananyabangla.com
Pingback: ভাষা কাকে বলে? | পশুদের ভাষা ভাষা নয় কেন? - Ananyabangla.com