শব্দবিভক্তির শ্রেণিবিভাগ
আমরা জানি, যে বিভক্তি শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে শব্দকে পদে পরিণত করে, তাকে শব্দবিভক্তি বলে। বাংলা ভাষায় শব্দবিভক্তিগুলি পদ দেখেই চিনতে পারা যায়। বাংলায় তাই শব্দ-বিভক্তির আলাদা করে নামকরণ করা হয় না। বিভক্তির চিহ্নটিই তার নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যেমন: “ছেলেটিকে কাছে ডাকো।” — এই বাক্যে ‘ছেলেটিকে’ পদের বিভক্তি হল ‘কে’ বিভক্তি। কিন্তু সংস্কৃত ব্যাকরণের অনুসরণে এখনও কেউ কেউ বাংলা বিভক্তিগুলির নামকরণ করতে চান। নিচে উদাহরণ সহ বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
সংস্কৃত অনুযায়ী শব্দ-বিভক্তির শ্রেণি
সংস্কৃত অনুযায়ী শব্দ বিভক্তি সাত প্রকার। নিচে উদাহরণ সহ এদের নাম দেওয়া হল।
কর্তৃ কারকের বিভক্তি: প্রথমা
কর্ম কারকের বিভক্তি: দ্বিতীয়া
করণ কারকের বিভক্তি : তৃতীয়া
সম্প্রদান/নিমিত্ত কারকের বিভক্তি: চতুর্থী **
অপাদান কারকের বিভক্তি: পঞ্চমী
সম্বন্ধ পদের বিভক্তি: : ষষ্ঠী
অধিকরণ কারকের বিভক্তি: সপ্তমী
বাংলায় বিভিন্ন বিভক্তির চিহ্ন
বাংলায় নির্দিষ্ট কারকে নির্দিষ্ট বিভক্তি-চিহ্ন হয় না। তবু কোন কারকে কোন বিভক্তির প্রয়োগ বেশি হয়, তার একটা মোটামুটি হিসেব দেওয়া যেতে পারে। নিচে তেমনই একটি তালিকা দেওয়া হল।
প্রথমা বিভক্তি: শূন্য
দ্বিতীয়া বিভক্তি: কে, রে
তৃতীয়া বিভক্তি : দ্বারা, দিয়া, দিয়ে, কর্তৃক (অনুসর্গ)
চতুর্থী বিভক্তি : জন্য, নিমিত্ত
পঞ্চমী বিভক্তি : হইতে, থেকে, চেয়ে (অনুসর্গ)
ষষ্ঠী বিভক্তি : র, এর, দের, দিগের
সপ্তমী বিভক্তি: এ (য়), তে
** বাংলা ভষায় সম্প্রদানের আলাদা বিভক্তি নেই। সম্প্রদান কারক বাংলায় আলাদা কারক হিসেবেও গণ্য হয় না। তাই চতুর্থীর বিভক্তি হিসেবে নিমিত্ত কারকের অনুসর্গগুলিকে ধরা যায়। সম্প্রদানকে আলাদা কারক ধরলে তার বিভক্তি কর্ম কারকের সঙ্গে অভিন্ন।
আরও পড়ুন